বুধবার পাকিস্তান ও সৌদি আরব স্বাক্ষর করেছে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি (এসএমডিএ)। পাকিস্তান সরকার একে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ইতিহাসে এক ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী বিন সালমানের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্বের গভীরতা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্প্রসারিত রূপ প্রতিফলিত হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান বা সৌদি আরবের যেকোনো এক দেশের ওপর বাইরের আক্রমণ হলে সেটি উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে। সেই ক্ষেত্রে দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী যৌথভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কর্মকর্তারা জানান, এই চুক্তি উভয় দেশের সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি, সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে, যা বর্তমান ও ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

চুক্তিতে যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, মহড়া এবং প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, এ চুক্তি শুধু দুই দেশের নিরাপত্তা শক্তিশালী করবে না, বরং শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার অভিন্ন লক্ষ্যও এগিয়ে নেবে।
বুধবার রিয়াদের কাসর আল ইয়ামামা রয়্যাল প্যালেসে পৌঁছালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে দেওয়া হয় পূর্ণ রাজকীয় অভ্যর্থনা। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান নিজে তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় সৌদি সশস্ত্র বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করে।
এর আগে সৌদি আকাশসীমায় প্রবেশের পরই শাহবাজ শরিফের বিশেষ উড়োজাহাজকে অভ্যর্থনা জানাতে আকাশে উঠে যায় রয়্যাল সৌদি এয়ার ফোর্সের এফ–১৫ যুদ্ধবিমান। বিমানে থাকা অবস্থায় শাহবাজ শরিফ বলেন, দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি একে বলেন, ‘আকাশপথে রাজকীয় অভ্যর্থনা’, যা দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক।
রিয়াদের কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে সৌজন্য অভ্যর্থনা জানান উপ–গভর্নর প্রিন্স মুহাম্মদ বিন আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজসহ সৌদি ও পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ কূটনীতিকেরা। এ সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে উড়ানো হয় পাকিস্তানের পতাকা, ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে জানানো হয় আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মুসাদ্দিক মালিক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী তারিক ফাতেমি।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই ইসলামাবাদে সরকারি ভবনগুলো আলোকসজ্জায় সেজেছে, উত্তোলন করা হয়েছে পাকিস্তান ও সৌদি আরবের পতাকা।
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন











