গাজার অবরোধ ভাঙতে যাত্রা করা সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন মার্কিন মানবাধিকারকর্মী টমি মার্কাস। ইহুদি বংশোদ্ভূ মার্কাস আল জাজিরা কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পুরোনো জায়নবাদী বিশ্বাসের প্রায়শ্চিত্ত করতে এবং মার্কিন সরকারের নীতির প্রতিবাদ জানাতেই তিনি এ যাত্রায় শামিল হয়েছেন।
টমি মার্কাস বলেন, ‘আমি একজন মার্কিন নাগরিক। আমার সরকার শুধু যে এই গণহত্যায় সমর্থন দিচ্ছে, তা–ই নয়, বরং তারা এই গণহত্যায় সরাসরি জড়িত। আমি এক জায়নবাদী পরিবেশে বড় হয়েছি। বহু বছর সেই মতাদর্শে বিশ্বাস করেছি, কারণ বিকল্প কোনো সত্য জানতাম না। আজ মনে করি, এর প্রায়শ্চিত্ত করা আমার দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন প্রভাবশালী মার্কিন রাজনীতিক। তাঁরা ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম দিককার সমর্থক ছিলেন। তাই একজন মার্কিন নাগরিক ও ইহুদি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি হিসেবে আমি বলতে চাই—এবার যথেষ্ট হয়েছে।’

ইহুদি হওয়া মানে শিশু হত্যাকারী নয়
মার্কাস বলেন, ইহুদি ধর্ম কোনোভাবেই সহিংসতা বা শিশু হত্যার শিক্ষা দেয় না। তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন ভালো ইহুদি হতে হলে ইসরায়েলকে সমর্থন করতেই হবে। অথচ ইহুদি ধর্ম এক সুন্দর ধর্ম, যা কখনোই দখল করা জমি রক্ষার জন্য শিশু হত্যার আহ্বান জানায় না। এ ধরনের কিছু তাওরাতে নেই।’
অভিযান–সংশ্লিষ্টদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসল সন্ত্রাস হচ্ছে গণহত্যা চালানো।’
ফিলিস্তিনিদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
মার্কাস নিজেকে একজন প্রভাবশালী কর্মী ও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। গত ছয় বছরে তিনি মানবিক উদ্যোগে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে শুধু এ গ্রীষ্মেই ফিলিস্তিনি শিশুদের সহায়তায় তিনি ২০ লাখ ডলার তুলেছেন। গাজায় সংহতির বার্তা পৌঁছে দিতে তিনি এ নৌযাত্রায় যোগ দেন।
কথার শেষে মার্কাস বলেন, ‘আমি চাই গাজার মানুষ জানুক—বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ আপনাদের দেখছে, আপনাদের জন্য ভাবছে। আপনারা দৃঢ় থাকুন। আমি গভীরভাবে দুঃখিত, আমার দেশের পক্ষ থেকে, আমাদের করা অন্যায়ের জন্য।
সূত্র: আল জাজিরা





