মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া। ছবি : আল জাজিরা

দীর্ঘ আলোচনার পর আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া। বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা তালেবান নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দেওয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে রাশিয়া।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা বিশ্বাস করি, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের দুই দেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আফগান রাষ্ট্রদূত গুল হাসান মস্কোয় রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সেই স্ত্রুখিনের কাছে তাঁর পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ তালেবান সরকারের প্রতি রাশিয়ার আনুষ্ঠানিক সমর্থনের স্পষ্ট প্রতিফলন।

স্বীকৃতির চেষ্টায় অনেক দূর

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার পর তালেবান সরকারকে আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় আফগানিস্তানে দুই দশকব্যাপী পশ্চিমা সামরিক অভিযান ও রাজনৈতিক পুনর্গঠন।

২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান পুনরায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ইসলামি ইমারত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। তবে অধিকাংশ দেশ এখনো তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।

স্বীকৃতি পেতে তালেবান সরকারের নানা কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। জাতিসংঘে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুমতি চেয়েছে তালেবান প্রশাসন। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে দূতাবাস চালুর চেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে নিজেদের বৈধতা তুলে ধরার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছ।

২০২২ সালের ১৭ মার্চ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের পথ আংশিকভাবে উন্মুক্ত হয়, যা তালেবান প্রশাসনের জন্য ছিল এক ধরনের কূটনৈতিক স্বস্তি।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে তালেবানের বড় সাফল্য

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার এই স্বীকৃতি তালেবান সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক অর্জন। বিশেষ করে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে এর প্রভাব উল্লেখযোগ্য হতে পারে।

তবে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ এখনো তথাকথিত নারী অধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির প্রশ্নে তালেবান প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে তালেবানের পথ সহজ হবে না বলেই মনে করেন পশ্চিমা পর্যবেক্ষকরা।

তবুও রাশিয়ার বলছে, আফগানিস্তানের বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছে।