২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)–এর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হয় সুদানের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘাত। সেই সংঘাত এখন পরিণত হয়েছে পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধে।
দুই বছরের এই যুদ্ধে দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ, আর পশ্চিম দারফুরে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘের হিসাবে, এ পর্যন্ত সুদান গৃহযুদ্ধে এক লাখ পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আর প্রায় এক কোটি বিশ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট।
নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো, এখন পর্যন্ত সুদানে কী ঘটছে, এর বিস্তারিত।
সুদান কোথায়?
আফ্রিকার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সুদান মহাদেশটির অন্যতম বৃহৎ দেশ। আয়তনে প্রায় ১৯ লাখ বর্গকিলোমিটার (৭ লাখ ৩৪ হাজার বর্গমাইল) জুড়ে বিস্তৃত সুদানের সীমানা সাতটি দেশের সঙ্গে যুক্ত, আর পূর্ব দিকে রয়েছে লোহিত সাগর। দেশটির ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে নীল নদ, যা কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে সুদানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
সুদানের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম, আর সরকারি ভাষা আরবি ও ইংরেজি।
যুদ্ধ শুরুর আগেও সুদান ছিল বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ, যদিও দেশটি স্বর্ণ উৎপাদনে সমৃদ্ধ।
২০২২ সালে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষের দেশটিতে মাথাপিছু বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ৭৫০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬০০ পাউন্ড)।
চলমান সংঘাতে সেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। গত বছর সুদানের অর্থমন্ত্রী জানান, যুদ্ধের কারণে দেশের রাজস্ব ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কেন এই সংঘাত?
সুদানে গৃহযুদ্ধের মূল সূত্রপাত ঘটে ২০১৯ সালে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপতি ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই। বশির ১৯৮৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন।
তিন দশকের শাসনের বিরোধিতায় বিক্ষুব্ধ জনগণ রাস্তায় নামে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অভ্যুত্থানে যোগ দেয় সেনাবাহিনী।
রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও সাধারণ মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যান। পরে সেনা–সিভিলিয়ান যৌথ সরকার গঠিত হলেও, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আবারও অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার উৎখাত করা হয়।
বর্তমান সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা দুই নেতা হলেন,
জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল বুরহান, সেনাবাহিনী প্রধান ও কার্যত দেশটির প্রেসিডেন্ট। এবং সহকারী, আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো, যিনি হামিদতি নামে পরিচিত।
কিন্তু এরপর জেনারেল বুরহান ও জেনারেল দাগালো দেশের দিকনির্দেশনা এবং নাগরিক শাসনের দিকে অগ্রযাত্রা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।
মূল দ্বন্দ্বের কারণ ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং সেই নতুন বাহিনীকে কে নেতৃত্ব দেবে তা নিয়ে।
আশঙ্কা করা হয়, উভয় জেনারেলই নিজেদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব হারাতে চাননি।
ক্রমে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। ওই সময় আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুনর্বিন্যাস করা হয়, যা সেনাবাহিনী হুমকি হিসেবে দেখে।
প্রথম গুলি কারা চালিয়েছিল, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে সংঘাত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। খারতুমের বড় অংশ আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। প্রায় দুই বছর পর, ২০২৫ সালের মার্চে সেনাবাহিনী আবার শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
কারা এই র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)?
র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফ গঠিত হয় ২০১৩ সালে। এর উৎপত্তি দারফুরের কুখ্যাত জানজাওয়িদ মিলিশিয়ার হাত ধরে। যাদের বিরুদ্ধে সেখানে বিদ্রোহীদের দমন অভিযানে অনারব জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের অভিযোগ রয়েছে।
পরে জেনারেল মুহাম্মদ হামদান দাগালো এই বাহিনীকে একটি শক্তিশালী সামরিক শক্তিতে পরিণত করেন। ইয়েমেন ও লিবিয়ার সংঘাতে তাদের হস্তক্ষেপের তথ্যও রয়েছে।
দাগালো সুদানের কিছু স্বর্ণখনির নিয়ন্ত্রণ করেন এবং অভিযোগ আছে, তিনি এসব স্বর্ণ গোপনে রপ্তানি করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই)।
সুদানের সেনাবাহিনীর বলছে, আরব আমিরাত আরএসএফকে সমর্থন দিচ্ছে এবং দেশটিতে ড্রোন হামলাও চালাচ্ছে। এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, সুদানের এই গৃহযুদ্ধ মূলত আরব আমিরাতই টিকিয়ে রাখছে। আরব আমিরাতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় সুদানে গণহত্যা চালাচ্ছে আরএসএফ
পূর্ব লিবিয়ার সামরিক শাসক জেনারেল খলিফা হাফতার আরএসএফকে সহায়তা দিচ্ছেন। তাঁর সহযোগিতায় আরএসএফ সুদানে অস্ত্র পাচার করছে এবং লড়াইয়ে শক্তি বাড়াতে যোদ্ধা পাঠানো হচ্ছে।
২০২৫ সালের জুনের শুরুতে আরএসএফ বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করে। তারা লিবিয়া ও মিশরের সীমান্তঘেঁষা বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়।
বাহিনীটি এখন প্রায় পুরো দারফুর এবং পার্শ্ববর্তী করদোফানের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
আরএসএফ প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এতে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সুদান হয়তো আবারও বিভক্ত হতে পারে। ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদান আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় দেশটি হারিয়েছিল তেলের অধিকাংশ ক্ষেত্র।
সুদানের উত্তর ও পূর্বের অধিকাংশ অঞ্চল এখনো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এই বাহিনীর প্রধান মিত্র হিসেবে দেখা হয় মিসরকে। দুই দেশের ভৌগোলিক ও কৌশলগত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, সীমান্ত ও নীলনদের পানিসম্পদ ভাগ করে নেওয়ার সূত্রে তাদের ভাগ্যও একসঙ্গে জড়িত।
জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল বুরহান এখন লোহিত সাগর উপকূলের শহর পোর্ট সুদানকে নিজের সদর দপ্তর এবং জাতিসংঘ–স্বীকৃত সরকারের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
তবে শহরটি এখনো অস্থির ও অনিরাপদ। ২০২৫ সালের মার্চে আরএসএফ সেখানে চালায় ভয়াবহ ড্রোন হামলা, যা ছিল সেনাবাহিনীর অগ্রযাত্রার জবাবে দেওয়া পাল্টা আঘাত। এর কিছুদিন আগেই প্রেসিডেন্সিয়াল রিপাবলিকান প্যালেসসহ খারতুমের বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নেয় সেনাবাহিনী।
‘খারতুম এখন মুক্ত, সব শেষ,’ বিজয়োল্লাসে শহরে ফিরে এসে ঘোষণা দেন জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল বুরহান। যদিও সেখানে তিনি স্থায়ীভাবে থাকেননি।
তবে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, যুদ্ধ এখন কৌশলগতভাবে অচলাবস্থায়। মিসর, তুরস্ক, কাতার ও ইরান থেকে নতুন করে পাওয়া অস্ত্র ব্যবহার করেও সেনাবাহিনী এখনো পুরোপুরি খারতুমের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি।
শহরটি এখন এক পুড়ে যাওয়া খোলস যেন। সরকারি দপ্তর, ব্যাংক আর বহুতল ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে কালো দগদগে ক্ষত নিয়ে।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে পরিণত হয়েছে বিধ্বস্ত বিমানের কবরস্থানে; পাসপোর্ট ও চেক-ইন কাউন্টারগুলো ছাইয়ে ঢেকে আছে।
হাসপাতাল আর ক্লিনিকগুলোর অবস্থাও করুণ। বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে। কখনো কখনো ভেতরে থাকা রোগীরা চাপা পড়েছেন ধ্বংসস্তূপে, পুড়ে হয়েছেন ছাই।
বর্তমানে সেনাবাহিনী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গেজিরা রাজ্যের প্রায় পুরো নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। ২০২৩ সালের শেষ দিকে রাজ্যটি আরএসএফ-এর হাতে চলে যাওয়া ছিল সেনাবাহিনীর জন্য বড় ধাক্কা। তখন রাজ্যের প্রধান শহর ওয়াদ মাদানি থেকে শত শত মানুষ জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যায়। যে শহরটি আগে ছিল দেশের অন্যান্য সংঘাত–পীড়িত অঞ্চল থেকে আসা মানুষের আশ্রয়স্থল সেটিও পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে।
মাসের পর মাস অবরোধ, গোলাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে দুর্ভিক্ষ। সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা জামজাম শরণার্থী শিবিরের। সেখানকার মানুষের এখনও অনাহারে দিন কাটছে।
সুদানে কি গণহত্যা চলছে?
দারফুরের অনেক বাসিন্দার বিশ্বাস, আরএসএফ ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা এমন এক যুদ্ধ চালাচ্ছে, যার লক্ষ্য এই জাতিগত বৈচিত্র্যময় অঞ্চলটিকে আরবশাসিত ভূখণ্ডে পরিণত করা।
২০২৪ সালের মার্চে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা এক বছর বয়সী শিশুদের পর্যন্তকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে। সংস্থাটি বলে, এই নৃশংসতার ফলে অনেক শিশু মানসিক আঘাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
একই মাসে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সতর্ক করে জানায়, দারফুরে মাসালিত জনগোষ্ঠীসহ অনারব সম্প্রদায়ের ওপর আরএসএফ ও তাদের সহযোগী মিলিশিয়ারা গণহত্যা চালাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এল জেনিনায় পরিকল্পিত জাতিগত নির্মূল অভিযানে নিহত হয়েছেন হাজারো মানুষ। অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল মাসালিত জনগোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে অঞ্চলটি থেকে উচ্ছেদ করা।
সংস্থাটি জানায়, এই হত্যাযজ্ঞের ধরন থেকে মনে হয় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) ও তাদের মিত্ররা মাসালিত জনগোষ্ঠীকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের উদ্দেশ্যে অভিযান চালিয়েছিল। এইচআরডব্লিউ মনে করে, ঘটনাটি গণহত্যার শামিল। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের প্রতি এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিদ্ধান্তে আসে যে আরএসএফ ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা আসলেই গণহত্যা সংঘটিত করেছে।
‘আরএসএফ ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা জাতিগত ভিত্তিতে পুরুষ ও কিশোর এমনকি নবজাতকদের পর্যন্ত হত্যা করেছে। নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর নারী ও কিশোরীদের উপর চালিয়েছে ধর্ষণসহ ভয়াবহ যৌন নির্যাতন,’ বলেছেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই একই মিলিশিয়ারা সংঘাত থেকে পালাতে চাওয়া সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা চালিয়েছে, নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করেছে এবং যারা এখনো সেখানে আছে, তাদের কাছে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছানোয় বাঁধা দিয়েছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে আমি নিশ্চিত হয়েছি, আরএসএফ ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ার সদস্যরা সুদানে গণহত্যা চালিয়েছে।’
এর পর যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল দাগালোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরে একই ব্যবস্থা নেওয়া হয় জেনারেল বুরহানের বিরুদ্ধেও।
সুদানের সরকার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগে বলা হয়, আরএসএফকে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে ইউএই সুদানে সংঘটিত গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে।
তবে আইসিজে মামলাটি গ্রহণ করেনি, জানায়—এ বিষয়ে তাদের এখতিয়ার নেই।
রায়কে স্বাগত জানায় ইউএই। দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, উপসাগরীয় এই রাষ্ট্রটির ‘সুদানের সংঘাতের জন্য কোনো দায় নেই।’
আরএসএফও গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে। তাদের দাবি, তারা দারফুরের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত নয়; এটি ছিল একটি ‘গোত্রীয় সংঘর্ষ।’
কিন্তু জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানান, তাঁরা এমন সাক্ষ্য পেয়েছেন যেখানে ভুক্তভোগী নারী বলেছেন, আরএসএফের যোদ্ধারা যৌন নির্যাতনের সময় তাঁদের উদ্দেশে বর্ণবাদী গালাগাল করেছে এবং বলেছে, তারা ‘আরব শিশু’ জন্ম দিতে বাধ্য হবে।
সংঘাত থামানোর কোনো উদ্যোগ হয়েছে কি?
সৌদি আরব ও বাহরাইনে একাধিক দফা শান্তি আলোচনা হয়েছে, কিন্তু তাতে কোনো ফল আসেনি।
বিবিসির আফ্রিকা-বিষয়ক সহকারী সম্পাদক অ্যান সোয়ি বলেন, উভয় পক্ষই, বিশেষ করে সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার অনীহা দেখিয়েছে।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস আফ্রিকার সাম্প্রতিক সংঘাত, বিশেষ করে সুদানের যুদ্ধ নিয়ে বৈশ্বিক আগ্রহের অভাবের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, বিশ্বের অন্যান্য সংকটের তুলনায় এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ অনেক কম।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এখানে বর্ণবাদের বিষয়টিও কাজ করছে।’
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) বলেছে, সুদানে যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ‘নীরস’ ও অকার্যকর। আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভাষায়, এই যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের প্রতিক্রিয়া ছিল ‘চরমভাবে অপ্রতুল’।
মানবিক সহায়তামূলক কাজেও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটেছে। ট্রাম্প প্রশাসন সাহায্য কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
ত্রাণকর্মীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, জরুরি খাদ্য বিতরণের এগারোশর বেশি রান্নাঘর বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিশ্বজুড়ে ধারণা জোরালো হয়েছে যে, সুদানের সংঘাত এখন বিশ্বের ‘ভুলে যাওয়া যুদ্ধ’।
সূত্র : বিবিসি











