উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগরে বিজেপি নেতা সাবেক এমএলএ রঘুবেন্দ্র প্রতাপ সিং প্রকাশ্যে হিন্দু যুবকদের মুসলিম নারীদের বিয়ে করে হিন্দু ধর্মে রূপান্তর করতে আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যারা তার কথামতো কাজ করবে, তাদের চাকরি ও জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
গত রবিবার দুমারিয়াগঞ্জ এলাকায় এক জনসভায় এই বক্তব্য দেয় রঘুবেন্দ্র প্রতাপ সিং। তার বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, উগ্রতা প্রদর্শন করে সে বলে, ‘আমাদের এলাকায় দুই হিন্দু নারী মুসলিম পুরুষকে বিয়ে করেছে। এর জবাবে তোমরা অন্তত ১০ জন মুসলিম নারীকে তুলে এনে জোরপূর্বক হলেও হিন্দু ধর্মে রূপান্তর করো। আমি ২০ জন মুসলিম নারীর বিনিময়ে ১০ জন হিন্দু নারীকেও মেনে নেব না।’

সিং বক্তব্যের সময় উপস্থিত জনতা থেকে হাত তুলে শপথ নেয়, আর সভাস্থল ভরে ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে। এরপর সিং মুসলমানদের উদ্দেশে সরাসরি হুমকি দেয়। সে বলে, হে মুসলমানেরা, শুনে রাখো—আমরা দুই হিন্দু মেয়ের মুসলিমকে বিয়ে করা মেনে নেব না। এর বড় প্রতিশোধ নেওয়া হবে। আমি এখানকার মোল্লা-মৌলভীদেরও সতর্ক করে দিচ্ছি।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরেও রাজ্যের হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন নিশ্চুপ থাকে। অথচ উত্তর প্রদেশে ধর্মান্তরবিরোধী কঠোর আইন রয়েছে, যার অজুহাতে মুসলিম পুরুষদের বিরুদ্ধে প্রায়ই মিথ্যা অভিযোগে মামলা হয়। কিন্তু হিন্দু নেতাদের প্রকাশ্য হুমকি ও ঘৃণামূলক বক্তব্যে প্রশাসনের নীরবতা নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
সাংবাদিক জাকির আলি তায়্যাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘যে উত্তর প্রদেশ পুলিশ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তরের নাটক সাজিয়ে মামলা করে, সেই পুলিশই হিন্দু গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে নীরব। কারণ, তারা হিন্দু।’ তিনি আরও বলেন, ’এই দেশে অনেক আইন আছে, কিন্তু সেগুলো শুধু মুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য। প্রকাশ্যে মুসলিমদের ধর্মান্তরের আহ্বান জানালেও হিন্দু নেতাদের কেউ ছুঁয়েও দেখেনা।’
উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির এই প্রকাশ্য উস্কানিমূলক ও ঘৃণ্য আচরণ ভারতকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়েই এখন উদ্বিগ্ন দেশের সচেতন মুসলিম নাগরিকরা।
সূত্র: মুসলিম মিরর





