হায়দরাবাদের ইএফএলইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি কেরালা রেস্টুরেন্টে মেনুতে গরুর মাংস রাখায় হামলা চালিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের সদস্যরা। এক পর্যায়ে তারা রেস্টুরেন্টটি জোর করে বন্ধও করে দেয়।
ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। ‘জাশ্যেত্তানের কেরালা তাত্তুকাডা’ নামে রেস্টুরেন্টটি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার কাছে অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েকজন সদস্য রেস্টুরেন্টে ঢুকে গ্রাহকদের বের করে দিয়ে হামলা চালায় এবং রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেন।

রেস্টুরেন্টটি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের কাছে কেরালার ঐতিহ্যবাহী খাবার—বিশেষ করে বিফ ফ্রাই ও পরোটার জন্য পরিচিত ছিল। হামলাকারীরা দাবি করে, দোকানের মালিকেরা ‘হিন্দুপ্রধান এলাকায়’ গরুর মাংস বিক্রি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।
এদিকে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো ঘটনার দুই দিন পার হয়ে গেলেও হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন—হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ভয়-ভীতি ছাড়াই যেন সবাই নিজেদের সংস্কৃতি ও খাদ্য ঐতিহ্য বজায় রাখতে পারে।
তেলেঙ্গানায় ও হায়দরাবাদের বিভিন্ন এলাকায় বহু রেস্টুরেন্ট তাদের মেনুতে গরুর মাংস রাখতে ভয় পাচ্ছেন। এমনকি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর ভয়েই অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের মেনু থেকে ‘বিফ’ শব্দটি বাদ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড ভারতজুড়ে ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা, খাদ্যাভ্যাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর একের পর এক আক্রমণ এখন যেন তাদের রাজনীতি ও পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠেছে। গরুর মাংসের অজুহাতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের টার্গেট করা, দোকান-রেস্টুরেন্টে হামলা চালানো কিংবা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া—সবই সেই একই উগ্র মনোভাবের প্রতিফলন। এমন কার্যকলাপ শুধু সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধকেই আঘাত করছে না, বরং ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের অস্তিত্বের জন্য এক গভীর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: মুসলিম মিরর





