ভারতের মধ্যপ্রদেশে আবারও উগ্র হিন্দুত্ববাদের ভয়ঙ্কর চেহারা সামনে এসেছে। ছাতারপুর জেলার হারপালপুর থানার অন্তর্গত ইমলিয়া গ্রামে একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পবিত্র কোরআন শরিফ, নামাজের জায়নামাজ এবং অন্যান্য ধর্মীয় জিনিসপত্রেও আগুন লাগানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের মধ্যরাতে ঘটে এই ভয়াবহ ঘটনা। স্থানীয় মুসলিমদের অভিযোগ—একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী গভীর রাতে মুখোশ পরে মসজিদে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং পরে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া।

তদন্তে জানা গেছে, এক মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে সামান্য বিবাদের জেরে এই হামলার পরিকল্পনা করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তারা শুধু মসজিদেই আগুন দেয়নি, আশপাশের ঘরবাড়িতেও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য দরজায় আঘাত করেছে এবং সম্পত্তি নষ্ট করেছে।
একজন স্থানীয় মুসলিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
‘তারা পবিত্র কোরআনের কপি, নামাজের জিনিসপত্র সবকিছুতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। যেসব বইয়ের দিকনির্দেশনায় আমরা জীবন চালাতাম, সব পুড়িয়ে দিয়েছে। এটা শুধু মসজিদে আগুন নয়, আমাদের অন্তরে আগুন লাগানো হয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত ছয়জনের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—হর্ষ পাতোরিয়া ও মনোজ পাতোরিয়া। বাকিরা—সাত্তু অনুরাগী, সুনীল রাজপুত, উমেশ পাল ও উন্নু রাজপুত—এখনও পলাতক। তাদের ধরতে তিন থেকে চারটি দল গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দুইজন আগেও একই ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আগেও মামলা হয়েছিল।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে নিরব ভূমিকা নেয় এবং কেবল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়েরের পর তৎপর হয়।
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অসংখ্য মানুষ লিখেছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, মূলত ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদ এখন ধর্মীয় সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে। এখানে এদের কারণে মুসলিমদের উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এমনকি জীবন পর্যন্ত নিরাপদ নয়।
সূত্র: মুসলিম মিরর





