মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

রোহিঙ্গারা বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠি

Screenshot-2025-03-06-121525-1140x638.png

বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও প্রকট হচ্ছে। বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় মানবিক পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনা অভিযানে হত্যা ও নির্যাতনের মুখে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তখন থেকে তারা কক্সবাজারের শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। শিবির গুলোতে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার ঘাটতি চরমে পৌঁছেছে। অনেক স্কুল-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, শিশু ও নারীদের মধ্যে অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতা দ্রুত বাড়ছে।

ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে সহায়তা কমিয়েছে। এ বছর রোহিঙ্গাদের জন্য প্রয়োজনীয় ৯৩৪ মিলিয়ন ডলারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ অর্থ এখন পর্যন্ত জোগাড় হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রান্নার জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে এবং বছরের শেষে খাদ্য সহায়তাও শেষ হয়ে যেতে পারে।

২০২৪ সালের শুরু থেকে নতুন করে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির দ্বিমুখী আগ্রাসন থেকে বাঁচতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এতে শিবিরের সংকট আরও তীব্র হয়েছে।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু অবিরাম শরণার্থী প্রবাহে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ২০২৬ সালের নির্বাচন সামনে রেখে এখন রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দাবিও উঠছে।

এদিকে শরণার্থী শিবির থেকে সমুদ্রপথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও বাড়ছে। গত মে মাসে বঙ্গোপসাগরে নৌকা ডুবে চার শতাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ হারায়।

ইকোনমিস্ট বলছে, মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতির হাত থেকে রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখা জরুরি। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে কাজের সুযোগ ও কিছুটা নির্মাণ স্বাধীনতা দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে প্রভাবশালী ভূমিকার কারণে সংকট সমাধানে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সাময়িকীটির ভাষ্য, এই সংকটকে অবহেলা করা হলে রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে দমন-পীড়ন ও দুর্দশার এক অচল চক্রে আটকে থাকবে।

জাতিসংঘের হিসাবে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।