ইসরায়েলের গণহত্যার সমর্থক, মুসলিমবিদ্বেষী ও মানবতাবিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত চার্লি কার্ক নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও কিছু গণমাধ্যম তাঁর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে এক গভীর নৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রকাশ।
কার্কের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘উটাহতে চার্লি কার্কের মর্মান্তিক মৃত্যু বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক বিশ্বাস কিংবা মতাদর্শের কারণে কারও ওপর সহিংসতা হওয়া উচিত নয়। মানুষের ধর্ম, চিন্তা বা দৃষ্টিভঙ্গি যেমনই হোক না কেন—এভাবে নৃশংসভাবে জীবন কেড়ে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এ হামলার নিন্দা জানাই এবং তাঁর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

এছাড়াও বিএনপিপন্থী এক্টিভিস্ট ফাহাম আব্দুস সালাম ও বাংলাদেশী অনেক মিডিয়া তার মৃত্যুতে সমবেদনা ও নিন্দা জানিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে কার্ক প্রকাশ্যে গাজার শিশু হত্যাকে সমর্থন করেছেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকার অস্বীকার করেছেন এবং ইসরায়েলের গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজেকে তিনি পরিচয় দিয়েছেন এভাবে—‘আমি খুবই প্রো-ইসরায়েল। আমি একজন ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান, রক্ষণশীল, ট্রাম্প সমর্থক। আর সারাজীবন আমি ইসরায়েলকেই সমর্থন দিয়ে এসেছি।’ এ বক্তব্য তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানের সীমা ছাড়িয়ে মানবতাবিরোধী মানসিকতারই প্রতিফলন। যখন বিশ্বব্যাপী মানুষ গাজায় নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদ করছে, তখন তিনি হত্যাকারী রাষ্ট্রের পক্ষ নিয়ে গণহত্যাকে আড়াল করতে ব্যস্ত ছিলেন।
নেটিজেনরা তারেক রহমানের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করছেন।
একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এমন একজন উগ্র চরিত্রের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা মানে হত্যাকারী শক্তির সঙ্গেই সংহতি দেখানো।’
অপর একজন তার ফেসবুক পোস্টে এর সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি এমন সমবেদনা জানান, তবে তা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও বেদনার প্রতি অবমাননা। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনের ন্যায়সংগ্রামের পাশে থেকেছে। অথচ রাজনীতিবিদেরা যদি গণহত্যার প্রচারকের মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানান, তবে তাঁরা আসলে ফিলিস্তিনিদের নয়, বরং ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞকেই পরোক্ষভাবে সমর্থন করছেন।’
শহিদ নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমের এই অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়, তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গণমানুষের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে নয়, বরং পশ্চিমা শক্তির তোষণেই বেশি মনোযোগী। এই তোষণই তাঁদের মানবতার বিপরীতে দাঁড় করাচ্ছে।
চার্লি কার্কের মৃত্যুতে শোক জানানো মানে গাজায় রক্তাক্ত শিশুদের কান্নাকে উপহাস করা। এটি শুধু রাজনৈতিক ভণ্ডামিই নয়, মুসলিম উম্মাহর প্রতি এক প্রকাশ্য বিশ্বাসঘাতকতা। আর এই বিশ্বাসঘাতকতার দায় ইতিহাসে চিরকাল লিপিবদ্ধ থাকবে।’
সূত্র: সোস্যাল মিডিয়া





