হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের ধ্বংস হওয়া যুদ্ধসুড়ঙ্গগুলো আবারও মেরামত করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি চ্যানেল 12-কে এক সেনা কর্মকর্তা জানান, কাসসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা ইতিমধ্যে গাজার সুড়ঙ্গগুলোর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মেরামত করেছে।
ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, যেসব সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা হয়েছে বলে সেনারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, সেখান থেকেই আবারও ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
তাদের দাবি, সম্প্রতি অন্তত ১০ বার এমন সুড়ঙ্গ থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছে কাসসামের যোদ্ধারা, ইতিপূর্বে যেগুলো ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি ও মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, গাজা দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় ধরনের জটিলতার মুখে পড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে শহরের দক্ষিণ ও পূর্বের জাইতুন, সাবরা, শুজাইয়া এবং উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হামাসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক তাদের ধারণার তুলনায় অনেক জটিল। তিনি স্বীকার করেন, গাজা শহরে হামাসের প্রকৃত শক্তি কতটা, তা নিশ্চিতভাবে জানে না ইসরায়েল।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি দৈনিক হারেতজ এক সামরিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, গাজাকে ভূ-পৃষ্ঠে ও ভূগর্ভে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে গেলে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। ঠিক যেমনটা ঘটেছে উত্তর গাজার বেইত হানুনে।
এমন পরিস্থিতিতেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কয়েক হাজার সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু চলমান মধ্যস্থতাকারীদের যুদ্ধবিরতির চেষ্টা পুরোপুরি উপেক্ষা করেছেন।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক সংস্থা। তারা সতর্ক করেছে, গাজার প্রায় এক মিলিয়ন মানুষের ওপর আরও ব্যাপক রক্তক্ষয়ী হামলা ও বাস্তুচ্যুতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজা উপত্যকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে দখলদার ইসরায়েল। এর মধ্যে রয়েছে নির্বিচারে হত্যা, অবরোধ, ধ্বংসযজ্ঞ ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি। আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশনা পুরোপুরি উপেক্ষা করেই চালানো হচ্ছে গণহত্যা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ শহিদ এবং প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার আহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৩৪৮ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ১২৭ জন শিশু।
সূত্র: আল জাজিরা, ইসরায়েলি গণমাধ্যম ও ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম





