গাজা যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলের সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের একটি গ্যাস রপ্তানি চুক্তি করেছে মিশর। ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন এই চুক্তিকে দেশের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড়’ বাণিজ্যিক চুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইসরায়েলের লেভিয়াথান গ্যাসক্ষেত্রের অংশীদার প্রতিষ্ঠান নিউ মেড জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় ২০৪০ সাল পর্যন্ত, অথবা মোট ১৩০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মিশরে গ্যাস রপ্তানি করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় জ্বালানিমন্ত্রী কোহেন বলেন, এই চুক্তি শুধু নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক দিক থেকে নয়, অর্থনীতির দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েল এখন আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে—আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো আমাদের গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে। তিনি আরও বলেন, এটি ইসরায়েলের অর্থনীতির জন্য এক বড় অর্জন। এর ফলে জাতীয় কোষাগারে বিপুল রাজস্ব আসবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই গ্যাস চুক্তি মিশরের বিদ্যমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ দেশটি বর্তমানে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় বিপুল ব্যয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করছে।
এর আগে, ২০১৯ সালে ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যে ৬০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস রপ্তানির একটি চুক্তি হয়েছিল। এবারের নতুন চুক্তিতে রপ্তানির পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা হবে সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে, যা এলএনজির তুলনায় অনেক কম খরচে সম্ভব। কারণ এলএনজিতে রপ্তানির জন্য গ্যাসকে তরলে রূপান্তর, তারপর জাহাজে পরিবহন এবং পরে আবার গ্যাসে রূপান্তরের মতো ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া লাগে।
আন্তর্জাতিক তথ্যভিত্তিক সংস্থা জোডি (Joint Organisations Data Initiative) জানায়, ইসরায়েল থেকে আসা গ্যাস মিশরের মোট চাহিদার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পূরণ করছে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের লেভিয়াথান গ্যাসক্ষেত্রটি ২০২০ সালে উৎপাদন শুরু করে। এখান থেকে জর্ডানেও গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তবে সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে গ্যাস রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।
সূত্র: ইসরায়েলি গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা





