গাজায় চলমান অবরোধ ভাঙতে যাওয়া ‘হানথালা’ নামের একটি বেসামরিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই হামলার পর জাহাজে থাকা ২১ জন যাত্রীকে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোববার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ জোট।
জোটের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘হানথালা’ ছিল একটি ত্রানবাহী জাহাজ। এতে ছিল গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, শিশুখাদ্য ও ডায়াপার। এসব সামগ্রী সরাসরি যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিতরণের উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছিল।
জাহাজে থাকা কর্মীদের বরাতে জানানো হয়, হামলার কিছুক্ষণ আগেই তিনটি ইসরায়েলি নৌযান ‘হনজালা’র কাছে গিয়ে হুমকি দেয়—জাহাজটি ফিরে না গেলে বলপ্রয়োগে দখলে নেবে। এ পরিস্থিতিতে জাহাজে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা জানায়, হামলার সময় ‘হনজালা’ আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থান করছিল, অর্থাৎ এটি ফিলিস্তিনি জলসীমার বাইরে ছিল। ফলে এই হামলা আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
২১ যাত্রী যাঁরা এখন নিখোঁজ, তাঁরা ১২টি দেশের নাগরিক। এদের মধ্যে রয়েছেন পার্লামেন্ট সদস্য, সাংবাদিক, আইনজীবী, শ্রমিক, পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মীরা।
জোট বলছে, চলতি বছর এটি তাদের তৃতীয় জাহাজে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা। এর আগে মে মাসে ইউরোপীয় জলসীমায় ‘কনসায়েন্স’ নামের একটি জাহাজে ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে চারজন আহত হন এবং জাহাজটি অচল হয়ে পড়ে। জুন মাসে ‘ম্যাডেলিন’ নামের আরেকটি জাহাজ জব্দ করে ইসরায়েলি বাহিনী, যেখান থেকে ১২ যাত্রীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের একজন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন।
ফ্লোটিলা জোট অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশনাকেও উপেক্ষা করছে। আদালত গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ উন্মুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছিল।
জোটের পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য বলেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় বিদেশি বেসামরিক নাগরিকদের আটকানোর কোনো অধিকার ইসরায়েলের নেই। এটা তাদের এখতিয়ারের বাইরে। জাহাজের যাত্রীরা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় কাজ করছিলেন। তাঁদের আটক অবৈধ, অন্যায় এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।
সূত্র: সাফা