মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

‘ইসরায়েলের দালাল’ আবু শাবাবকে ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিল জয়েন্ট অপারেশনস রুম

গাজায় গুপ্তচরবৃত্তি ও সশস্ত্র গ্যাং গঠনের অভিযোগ, ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার দায়ে রক্ত হালাল ঘোষণা
আবু শাবাব
ইসরায়েলের দালাল আবু শাবাব। ছবি : আল জাজিরা


গুপ্তচরবৃত্তি, দেশদ্রোহ এবং গাজায় একটি সশস্ত্র গ্যাং গঠনের অভিযোগে অভিযুক্ত ইয়াসির আবু শাবাব ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম ‘জয়েন্ট অপারেশনস রুম’।

রোববার এক বিবৃতিতে আবু শাবাবকে ‘ভাড়াটে দেশদ্রোহী’ ও ‘জাতির শত্রু’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, সে এবং তার দল জাতিগতভাবে ফিলিস্তিনি হলেও তাদের পরিচয় এখন আর এই জাতির সঙ্গে মিলে না। তারা পথভ্রষ্ট ও বিকৃত চেতনার একদল দালাল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমন কাউকে ক্ষমা করা হবে না, যারা দখলদারদের সহযোগী হয়ে জাতির বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলে। বিশ্বাসঘাতকদের স্থান ইতিহাসের আবর্জনার স্তূপে। তারা শুধু জাতির নয়, সৃষ্টিকর্তার কাছেও লাঞ্ছিত ও ঘৃণিত হবে।

গাজার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা
আবু শাবাবকে ঘিরে বিভিন্ন গোত্র ও পরিবারের প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার জনগণ জানে কে প্রকৃত দেশপ্রেমিক আর কে দখলদারদের ভাড়াটে। কিছু বিপথগামী ব্যক্তি গোত্র বা পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে পারবে না। নিজেদের ভূমিকার জন্য আমরা আমাদের সমাজকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আত্মসমর্পণের জন্য ১০ দিনের সময়
এদিকে গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সামরিক আদালতের বিপ্লবী শাখা আবু শাবাবকে আত্মসমর্পণের জন্য ১০ দিনের সময় দিয়েছে। ২ জুলাই থেকে গণনা শুরু করে এই সময়সীমার মধ্যে সে আত্মসমর্পণ না করলে, অনুপস্থিতিতেই তার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।

আদালতের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত ১৯৬০ সালের ফিলিস্তিনি দণ্ডবিধি এবং ১৯৭৯ সালের বিপ্লবী বিচারবিধির আওতায় নেওয়া হয়েছে।

আবু শাবাবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হলো—

  • ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিশ্বাসঘাতকতা (দণ্ডবিধির ১৩১ ধারা),
  • একটি সশস্ত্র গ্যাং গঠন (১৭৬ ধারা),
  • সশস্ত্র বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া (১৬৮ ধারা)।

এছাড়া, কেউ যদি আবু শাবাবের অবস্থান জেনেও তা কর্তৃপক্ষকে না জানায়, তাকেও অপরাধে সহায়তাকারী হিসেবে গণ্য করা হবে বলে সতর্ক করেছে আদালত।

দীর্ঘদিনের নজরদারিতে
১৯৯০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেওয়া আবু শাবাবের গতিবিধি বহুদিন ধরেই নজরদারিতে রেখেছিল গাজার নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের শেষ দিকে সে একটি সশস্ত্র গ্যাং গঠন করে, যারা ইসরায়েলের হয়ে কাজ করছে। বর্তমানে তারা রাফার পূর্বাঞ্চলে আত্মগোপনে রয়েছে, যেটি এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।

আবু শাবাব ও তার দল শুধু গাজার নাগরিকদের হত্যা করেনি, তারা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদেরকেও টার্গেট করেছে। এমনকি কেরেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা মানবিক সহায়তা লুট করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সবকিছুই হয়েছে ইসরায়েলি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে।

‘নতুন কৌশলে’ ইসরায়েল
বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় প্রতিরোধ আন্দোলনকে দুর্বল করতে ইসরায়েল এখন ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। তারা স্থানীয় ভাড়াটে গ্যাং গঠন ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। এসব গ্যাংকে ব্যবহার করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে দখলদার বাহিনী।

সর্বশেষ