ইয়েমেনের রাইমা প্রদেশে হুথি বিদ্রোহীদের বর্বর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির প্রখ্যাত আলেম ও শিক্ষাবিদ শায়েখ সালেহ হানতুস। ৭০ বছর বয়সী এই ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে লক্ষ্য করে চালানো হয় রকেটচালিত গ্রেনেড ও ভারী অস্ত্রের সঙ্ঘবদ্ধ হামলা। তাঁর বাড়িতে লাগানো আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি ও তাঁর স্ত্রী।
ঘটনাটি ঘটেছে রাইমা প্রদেশের আস-সালাফিয়া জেলায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শেখ হানতুস স্থানীয় একটি মসজিদে শিশুদের কোরআন ও আরবি শিক্ষা দিচ্ছিলেন। হুথি মিলিশিয়া তাঁকে এই শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার দিন হুথি বাহিনী ২০টির বেশি সামরিক যান নিয়ে ঘিরে ফেলে শায়েখ হানতুসের বাড়ি। এরপর শুরু হয় ভারী গোলাবর্ষণ ও বিস্ফোরণ। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাঁর বাড়ি, পরিচালিত কোরআনিক স্কুল এবং সংলগ্ন মসজিদ। হামলার সময় তাঁর স্ত্রীও পাশে ছিলেন—নিজ চোখে দেখতে হয়েছে স্বামীর করুণ মৃত্যু।
শায়েখ সালেহ হানতুস রাইমা অঞ্চলের ধর্মীয় অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত একটি নাম। চার দশকের বেশি সময় তিনি নিবেদিত ছিলেন কোরআন শিক্ষা প্রচারে। স্থানীয়দের ভাষায়, তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয়, কোমলস্বভাবের ও সমাজবান্ধব একজন মানুষ, যিনি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ইয়েমেনজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংস্থা একে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ এবং ধর্মীয় শিক্ষার বিরুদ্ধে ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে—অনেকে বলছেন, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই হামলা শুধু একটি ব্যক্তিকে টার্গেট করা নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষা ও বিশ্বাসের ওপর আঘাত। এখনো এ হামলা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তদন্ত ঘোষণা আসেনি। তবে নিহত আলেমের পরিবার ও অনুসারীরা দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সূত্র: ডিএম