ছবির যে ব্যক্তিটিকে দেখতে পাচ্ছেন, তার নাম আবু উমর আস-সুরি। এটা তার নিকনেম। আসল নাম হাকাম আল ইসা। গত পরশু ২৯ জুন শনিবার সন্ধ্যায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শহিদ হয়েছেন। সঙ্গে ছিল তার নাতি ও স্ত্রী।
তার জীবনের অভিযাত্রা নিয়ে ঘাঁটলাম। যতটুকু জানলাম, এতটা অভিভূত হলাম বলবার মত নয়। মানুষের জীবন এত মহান কিভাবে হতে পারে?
সুরির জন্ম কুয়েতে ১৯৬৭ সালে। তার পরিবার ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে কুয়েতে চলে আসেন। প্রাথমিক পড়াশোনা কুয়েতেই করেন তিনি।
এরপর পড়াশোনা করতে আসেন, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভূপালে৷ এখানেই বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করেন। বলা হয়, এখান থেকেই তার জিহাদি যাত্রা শুরু হয়।
সামরিক ট্রেনিং নেন ইরানের খুজিস্তানে। এখান থেকে চলে যান চেচেনিয়ার যুদ্ধে। এরপর ফিরে আসেন আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে। আফগানিস্তান থেকে ফিরে যান লেবাননে। ( এক সূত্র মতে, ইরাক যুদ্ধেও তিনি অংশ নিয়েছেন )। এবং সর্বশেষ লেবানন থেকে সিরিয়ায়। ২০০৫ সালে সিরিয়া ছেড়ে তিনি গাজায় প্রবেশ করেন।
কাসসাম ব্রিগেডের সামরিক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাপনাকে তিনি অনন্য জায়গায় নিয়ে যান। আফগান,চেচেন,ইরান, লেবানন, সিরিয়া অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কাসসামের সামরিক একাডেমি। এক পর্যায়ে তার নাম হয়ে ‘প্রশিক্ষণকেন্দ্রের অভিভাবক’।
এ সময়ে তিনি ব্রিগেডের অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষত, গাজায় আকাশ প্রতিরক্ষা শাখার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ছিলেন তিনি।
এমনকি তুফানুল আকসার একজন গুরুত্বপূর্ণ মাস্টারমাইন্ড বলা হয় তাকে। এবং হামাসের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন তিনি।
গাজায় প্রবেশের পর থেকে তিনি আর কখনো সেখান থেকে বের হননি। তার ঘনিষ্ঠজনদের মতে, তিনি প্রায়ই এ কথা বলতেন,
‘স্ত্রী ও ছোট সন্তানদের সঙ্গে গাজা
প্রবেশ করার পর এখান থেকে আমি শুধু দু’ভাবে বের হব। হয়তো পশ্চিম তীরকে মুক্ত করে বিজয়ীরূপে, নাহলে জান্নাতুল ফেরদাউসের পথে।’
কী অভিনব জীবন।











