মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার (৬ মে) ঘোষণা দিয়েছেন, হুতি যোদ্ধারা যুদ্ধ থামানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে চালানো হামলা বন্ধ করছে। তিনি বলেন, ‘হুতিরা বলেছে, তারা আর লড়াই করতে চায় না—এটা খুবই ভালো খবর।’
ওমানের মধ্যস্থতায় এ সমঝোতা হয়েছে বলে জানানো হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি হুতিদের কথা বিশ্বাস করছি, তারা বলেছে আমাদের আর আক্রমণ করবে না, তাই আমরা এখনই বোমাবর্ষণ থামাচ্ছি।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘তারা আত্মসমর্পণ করেছে এবং আমাদের অনুরোধ করেছে যেন আমরা হামলা বন্ধ করি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকেও হামলা বন্ধে নির্দেশ
সিএনএন জানিয়েছে, পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীকে ইয়েমেনে হামলা বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র মতে, এই সমঝোতা হয়েছে ট্রাম্পের দূত স্টিভেন উইটকোভের নেতৃত্বে ওমানের মধ্যস্থতায় হুতিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে।
ওমানের ঘোষণা: সবপক্ষ হামলা বন্ধে একমত
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওয়াশিংটন ও সানার সঙ্গে তাদের আলোচনায় একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘কোনো পক্ষ আর কাউকে লক্ষ্যবস্তু করবে না—এমনকি মার্কিন জাহাজও নয়।’
হুতিদের দাবি: এটি আমাদের বিজয়
আনসারুল্লাহ (হুতি) রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী হুতি ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘একটি ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমেরিকার পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের সূচনা। এখন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ করা উচিত।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা মাঠপর্যায়ে যাচাই করব, সত্যিই হামলা বন্ধ হয়েছে কিনা।’
ইসরায়েলের ক্ষোভ: ‘খুব খারাপ খবর’
ট্রাম্পের এই ঘোষণায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘ইসরায়েল হাইয়োম’ বলেছে, ‘ট্রাম্পের ঘোষণাটি আমাদের জন্য খুব খারাপ সংবাদ।’
‘অ্যাক্সিওস’-এ প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র আগাম কোনো বার্তা না দিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা তেল আবিবকে বিস্মিত করেছে।
এদিকে একই দিন ইসরায়েল ইয়েমেনের রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান হামলা চালিয়ে তা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। এর আগে হোদাইদা বন্দরে হামলা চালানো হয়।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগেই ‘বিশাল ঘোষণা’
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে আমরা একটি বিশাল ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।’
পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গাজায় মানবিক ত্রাণ পাঠানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসছে। কাতারে মার্কিন উপদেষ্টা মেসাদ বুলুসের বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ বলেও উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, ১৩ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যদিও ইসরায়েল এই সফরে অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে তেল আবিব সফরের বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
সূত্র: আল জাজিরা