মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

ইরানে হামলার পরিকল্পনায় ইসরায়েলকে সমর্থন করেনি যুক্তরাষ্ট্র

ইরানে হামলার পরিকল্পনায় ইসরায়েলকে সমর্থন করেনি যুক্তরাষ্ট্র ।
ইরানে হামলার পরিকল্পনায় ইসরায়েলকে সমর্থন করেনি যুক্তরাষ্ট্র । ছবি : আরটি

আগামী মে মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে তেল আবিব—এমনটাই জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস ।

পত্রিকাটি জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনে সামরিক অভিযান নয়, কূটনৈতিক সমাধানকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এপ্রিলের শুরুতে তিনি ইসরায়েলকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপে অংশ নেবে না। ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠককালে ট্রাম্প তার অবস্থান স্পষ্ট করেন।

মার্চ মাসে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি বার্তা পাঠান। উক্ত বার্তায় পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি চুক্তির প্রস্তাব দেন তিনি। একই সঙ্গে, চুক্তি প্রত্যাখ্যান করা হলে সামরিক জবাব দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় ওই বার্তায়।

তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনা করতে আগ্রহী নয়। তাঁর ভাষায়, তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতায় আলোচনা সম্ভব হলেও সরাসরি সংলাপের পথ বন্ধ।

এই প্রেক্ষাপটে গত শনিবার ওমানের রাজধানী মাসকাটে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি পরোক্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। বৈঠকে মূলত পারমাণবিক ইস্যু এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই পরোক্ষ সংলাপের দ্বিতীয় দফা আগামীতে ইতালির রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান ও ছয় দেশের (যুক্তরাজ্য, জার্মানি, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স) মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখার শর্তে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পায়। তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তি থেকে সরে আসার পর তেহরানও ধাপে ধাপে চুক্তির শর্ত পালন থেকে সরে আসে, যার মধ্যে ছিল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও গবেষণা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া। এতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। যদিও সাম্প্রতিক মাসকাট বৈঠকে উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত মিলেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্থায়ী সমাধানের জন্য পরস্পরের মধ্যে আস্থার ঘাটতি এখনও বড় বাধা হয়ে আছে।

পরবর্তী বৈঠকে দুই পক্ষ কোনো কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে কি না, এখন সেই দিকেই নজর আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, তাস

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা