মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তন : গণতন্ত্র  না কৌশল?

সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তন : গণতন্ত্র  না কৌশল?
সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তন : গণতন্ত্র  না কৌশল?

৮ ডিসেম্বর আসাদ সরকার পতনের পর থেকে সিরিয়ার নবনির্বাচিত নেতৃত্বের প্রতি পরামর্শ আর দিকনির্দেশনার যেন বন্যা বইছে। এসব ‘নির্দেশনা’ এসেছে নানা দিক থেকে—কিছু এসেছে বাইরের রাষ্ট্র কিংবা এমন কিছু গোষ্ঠী থেকে, যাদের সাথে এই বিপ্লবের কোনো সম্পর্কই ছিল না। আবার কিছু এসেছে দেশের ভেতর থেকেই, বেসামরিক কিম্বা অপ্রশাসনিক নাগরিকদের থেকে।

তবে এই পরামর্শদাতারা সবাই যে একই লক্ষ্যে একমত—তা নয়। সংস্কারের পথ, তার সীমা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তাদের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন। ফলে, বিপ্লবের ভবিষ্যৎ ভাবনায় তাদের নিষ্ঠা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী মহল থেকে নতুন সরকারকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই ’মারমুখো’ অবস্থান নেওয়া হয়েছে।‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা’ ইস্যুকে সামনে এনে এমন ভাষায় সমালোচনা চলছে—যাতে মনে হয় বিগত আমলে সিরিয়ার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সুন্নি জনগোষ্ঠী ছিল না, বরং সুন্নিরাই যেন এই সংকটের জন্য দায়ী।

আমরা এখানে আলোচনা করছি রাজনৈতিক ভাষা ও প্রেক্ষাপটে—যেখানে বিষয়টি আর কেবল কোনো ধর্মীয় বিভাজনের প্রকাশ নয়—বরং এটি এক ধরনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল ফ্রেম তৈরি করছে । এই বিশৃঙ্খলায় অপরাধী আর ভুক্তভোগীর সীমারেখা ধোঁয়াশায় পড়ে গেছে।

এ কারণেই আমরা দেখেছি, সিরিয়ার বহু লেখক ও চিন্তাশীল মানুষ—যারা নিজে সুন্নি নন—তাদের অনেকেই এই বেপরোয়া প্রচারণার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সুন্নিদের প্রতি যেভাবে বিদ্বেষপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে তারা আপত্তি তুলেছেন। অথচ সুন্নি জনগোষ্ঠীর ক্ষত এখনো শুকায়নি, রক্তপাতও থামেনি। কারণ অনেক ট্র্যাজেডির গল্প এখনো তদন্ত কমিটি বা সাধারণ মানুষের সামনেই আসেনি।

এটি অস্বীকার করা যায় না যে, আধুনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান এবং সামাজিক চুক্তি অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা পূরণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, গৃহযুদ্ধের কোনো আশঙ্কা বিপ্লবী সরকার এবং সিরিয়ার সব জনগণের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে—যদি বিপ্লবী সরকার এবং সমাজ একত্রিত হয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে না যায়।

‘সংস্কারপর্ব’ নামের এই ধারণার বাস্তব প্রয়োগ দক্ষিণ-বিশ্বে ( দক্ষিণ বিশ্ব বা Global South বলতে সাধারণত সেই দেশগুলোকে বোঝানো হয় যেগুলো তুলনামূলকভাবে কম উন্নয়নশীল বা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এদের বেশিরভাগই আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলে অবস্থিত ) একাধিক রক্তাক্ত ও মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছে। এসব ব্যর্থতার পেছনে শুধু জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা বা সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত না করার দায়ই নেই। মূল সমস্যা শুরু হয় সমাজের বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে ফেলার মাধ্যমে—প্রথমে চালু করা হয় বিভাজনের সংস্কৃতি, এরপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক ধরনের দুর্বল ও অস্থির রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা। শেষমেশ এই ব্যবস্থাগুলোকে ঠেলে দেওয়া হয় সংঘাতের দিকে, যাতে পুরো সংস্কারপর্বই ভেঙে পড়ে। এর পরিণতি—একটি রক্তাক্ত ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি, যেখানে সাধারণ মানুষ না পায় শান্তি, না পায় নিরাপত্তা।

এই কারণেই রুয়ান্ডার নেতা পল কাগামে—যিনি ভয়াবহ গণহত্যার পর দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন—আফ্রিকার মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া পশ্চিম থেকে  আমদানি করা শাসনব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। এবং সেই ব্যবস্থার প্রতি অন্ধ আনুগত্য থেকে নিজেকে মুক্ত করে গ্রহণ করেন বাস্তবভিত্তিক এক পন্থা। ফলাফলও মেলে হাতে-নাতে—উন্নয়নের নানা সূচকে রুয়ান্ডা এখন অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। শান্তি, গণঅংশগ্রহণ এবং নাগরিক অগ্রগতিতে রুয়ান্ডা আজ আফ্রিকার এক উদাহরণ।

প্রাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে—এই পথেই তিনি সফল হয়েছেন। শান্তি, নিরাপত্তা, জনসম্পৃক্ততা ও নাগরিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রুয়ান্ডা এখন আফ্রিকার অন্যতম অগ্রগামী দেশ। বহু ক্ষেত্রে রুয়ান্ডা এখন দৃষ্টান্ত।

পশ্চিমের গণতান্ত্রিক সংস্কারের চাপ, মূলত উত্তর গোলার্ধের বৈশ্বিক ব্যবস্থার স্বার্থ রক্ষায় একটি বড় কৌশল হিসেবে কাজ করে। এর লক্ষ্য, স্বাধীনতা অর্জনের পর বা মুক্তির সংগ্রামের পর উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতাকে সীমিত করা। ধর্মীয় বা জাতিগত শাসনব্যবস্থাগুলো, যেমন সিরিয়ার আসাদ সরকারের শাসন, অনেক ক্ষেত্রেই পশ্চিমা বিশ্বকে সুবিধা দিয়ে এসেছে। এসব শাসন কাঠামো জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করে সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করেছে। তারা ধর্ম ও জাতির নামে বিভেদ সৃষ্টি করে, সমাজের ভেতরে ‘অশুদ্ধতা’র ধারণা ছড়িয়ে দেয়। এর ফলে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না, আর সেই সুযোগেই পশ্চিমা শক্তিগুলো তাদের স্বার্থ রক্ষা করে। কারণ এই বিভাজনই জনগণের স্বাধীনতা, প্রতিরোধ কিংবা উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করে দেয়।

পশ্চিমা দেশগুলো প্রকৃত অর্থেই এসব শাসনব্যবস্থার সমর্থন করছে বা তাদের মিত্র হিসেবে দেখছে এমন না। বরং রাজনৈতিক সহিংসতা ও রক্তপাতের যে ধারা, তা পশ্চিমাদের কাছে একটি কার্যকর কৌশল। এই কৌশলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা জিইয়ে রাখা সম্ভব হয়। পশ্চিম এ ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে ‘সৃষ্টিশীল অরাজকতা’ নামে আখ্যা দিয়ে, স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে।

সিরিয়া নিয়ে যে বর্ণনা বিশ্বমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে—যেন এটি শুধুই একটি গৃহযুদ্ধ, যা কেবল সামাজিক সংঘাত ও গণহত্যা থেকে শুরু—তা একপাক্ষিক এবং বিভ্রান্তিকর। এটি আদতে একটি অধিকারভিত্তিক গণআন্দোলন ছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক পরিবর্তন। ভিন্ন মতাদর্শ ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষরাও এই আন্দোলনে এক হয়েছিল একটি মৌলিক দাবিতে—একটি সাংবিধানিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে থাকবে আইনের শাসন ও নাগরিক অধিকার।

এজন্যই আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল ‘স্যারুতে’র গান। যা সিরিয়ার মানুষের কাছে আজ স্বাধীনতার নতুন সুর, ঐক্যের প্রতিধ্বনি। শুধু সিরিয়ার মধ্যেই নয়, এই গান ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে—একটি মানবিক মুক্তির প্রতীক হিসেবে। অনেকেই এর তুলনা করছেন চে গুয়েভারার সংগ্রামী চেতনার সঙ্গে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে সিরিয়ায় যে গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তা মূলত একটি ভ্রান্ত ধারণার উপর দাঁড়ানো। তারা ধরে নিচ্ছে, সিরিয়ার সংকটের মূল ভিত্তি ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয়। ফলে সম্মেলনগুলো এমনভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যেন সিরিয়া একটি চলমান জাতিগত সংঘাতে নিমজ্জিত, আর সেখান থেকেই উত্তরণের পথ খোঁজা দরকার।

এই দৃষ্টিভঙ্গি আসলে দীর্ঘদিন ধরে শাসকগোষ্ঠী যে বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে এসেছে, তাকেই আরও হাওয়া দেয়। অথচ দরকার ছিল ভিন্ন পথের—সংকট সমাধানে মাঠপর্যায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করা। তারপর জাতীয় সংলাপ ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি কৌশলগত ও জাতীয় সংস্কারের পথে অগ্রসর হওয়া।

আমরা এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা বা বিপ্লবের সর্বাধিনায়ক আহমদ আশ-শারার নেতৃত্বকে নিখুঁত বলছি না। তবে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা এটিই ইঙ্গিত দিচ্ছে—তাদের রূপরেখা ধীরে ধীরে সাফল্যের দিকে এগোচ্ছে। বিশেষ করে নাগরিক নিরাপত্তা, মৌলিক সেবা ও জনজীবনের প্রয়োজন মেটাতে যে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, তা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছে প্রাণবন্তভাবে।

নিশ্চয়ই এতে সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি রয়েছে। তবে যেটুকু বাস্তবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে, তা বিস্ময় জাগায়। একই সঙ্গে সামনে নিয়ে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আশাব্যঞ্জক প্রশ্ন—ইদলিবের অভিজ্ঞতাকে যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন আহমদ আশ-শারা, তা সিরিয়ার বর্তমান বাস্তবতায় এক নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যদি পশ্চিমা মডেলের গণতান্ত্রিক সংস্কার এমন হয়—যেখানে যুদ্ধাপরাধে জড়িত হাজারো অপরাধীর বিচার বছরের পর বছর ঝুলে থাকে, আর একসময়ের সন্ত্রাসী কাঠামোর অংশীদাররাই নতুন রাষ্ট্রের অংশীদার হয়ে ওঠে—তবে তা কোনো সুবিচার নয়। বরং এটি পুরোনো অন্যায়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করার নামান্তর।

ফলে জনতার ক্ষোভ প্রশমিত করার যে ন্যায়বিচার প্রয়োজন ছিল, তা অধরাই থেকে যায়।

অপরদিকে, একটি কৌশলগত ও জাতীয় নিরাপত্তাভিত্তিক সংস্কার প্রক্রিয়া, যেখানে অপরাধীদের যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারের আওতায় আনা হয়, তবেই স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। এভাবেই একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মূল ভিত রচিত হয়—জনগণের আস্থা, সম্মান ও নিরাপত্তার ভিত্তিতে।

এভাবে ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা জনগণের স্বার্থে পুনঃস্থাপন করা হয়, যা সামাজিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায় এবং নাগরিক শান্তি নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়। অতীতের অন্ধকার ইতিহাসকে অতিক্রম করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়া সমাজে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পদক্ষেপের সঙ্গে সমন্বয়ে চলতে পারে, যেখানে নাগরিক সমাজও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে।

কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপরাধমূলক কার্যক্রমের চেয়ে রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক অবস্থানই ছিল মূল। তাই রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ জরুরি। যেগুলোর মধ্যে সরাসরি দায় প্রমাণিত হবে, সেগুলোকে বিচারের আওতায় এনে, যেসব ক্ষেত্রে সরাসরি অপরাধের প্রমাণ নেই, সেগুলোর জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা উচিত।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বিষয় স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন, তা হল যে গণতান্ত্রিক সংস্কাী তার পর্যায়ক্রমিক প্রক্রিয়া চলাকালীন বৈধ রাষ্ট্রের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়। এটি আসাদ শাসনের অধীনে তৈরি হওয়া বিভাজনের পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যা ইসরায়েলি বা পশ্চিমা প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বিত। এর ফলে, বৈধ রাষ্ট্র তার ভূরাজনৈতিক সীমানা রক্ষা করতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের জন্য ক্ষেত্র তৈরি হয়।

ফলে দেশ এক ধরনের বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি হয়, যেখানে ভবিষ্যতে বিভাজনের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর বিপরীতে, একটি কৌশলগত ও জাতীয় সংস্কার পরিকল্পনা গঠনমূলকভাবে এগিয়ে যায়—যেখানে নিরাপত্তা, জীবিকা ও নাগরিক অধিকার একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করে। এই প্রক্রিয়া জনগণের অংশগ্রহণ এবং নির্বাচনকে স্বাভাবিক ও অর্থবহ করে তোলে। এর মাধ্যমেই গড়ে ওঠে একটি সুসংগঠিত, শক্তিশালী রাষ্ট্রের ভিত্তি—যা পশ্চিমা ও আরব বিশ্ব থেকে আসা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেয়।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা