সালামির প্রচলন ঘটে ফাতেমীদের সময়ে। সেসময় আলেম ও হাফেজ সাহেবদের হাদিয়া দেওয়া হতো।
‘সালামি’ ঈদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি প্রাচীন সামাজিক রীতি। বর্তমানে ‘সালামি’ শিশুদের জন্য ঈদের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত ও আনন্দদায়ক মুহূর্ত। অনেক পরিবারেই বড়রা শিশুদের ঈদ সালামি হিসেবে নগদ টাকা দিয়ে থাকেন, যা শিশুদের ঈদ আনন্দকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় ।
আচ্ছা, ঈদ সালামির ধারণাটি কোত্থেকে এলো? সালামির ইতিহাসই বা কী?
ঈদ সালামি: ফাতেমীয় প্রথা
ঈদ সেলামি’র প্রচলন ঠিক কবে থেকে শুরু— এ নিয়ে ইতিহাসে নানান বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে ফাতেমি শাসনামলের ইতিহাস রচয়িতাদের বর্ণনায় এর উল্লেখ পাওয়া যায়, বিশেষত ইতিহাসবিদ মাকরিজির বর্ণনায়।
কোনো কোনো ঐতিহাসিক উৎসগ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমি খলিফা হাকিম বিআমরিল্লাহ ঈদুল আযহায় ঈদ সালামি প্রদান করার জন্য রাজস্ব থেকে ভাতা নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। অন্যান্য কিছু ওয়েবসাইট ও পত্রিকার সূত্রে জানা যায় যে, ফাতেমি খলিফা আল-মুঈয লি-দী নিল্লাহ সর্বপ্রথম ঈদ সালামির প্রথা চালু করেছিলেন।
কেবল শিশুদের জন্য ছিল না
সালামির সূচনা ঠিক কবে থেকে, তা ইতিহাসে নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও এটি ফাতেমিদের একটি প্রচলিত রেওয়াজ ছিল। অথবা বলা যায়, মিশরে ফাতেমি শাসনামলেই এর ব্যাপক প্রচলন ঘটে।
এটিও স্পষ্ট যে সালামি শুধুমাত্র শিশুদের জন্য সীমিত ছিল না; বরং রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, আলেম, হাফেজ সাহেবগণ এবং প্রাসাদে আগত অতিথিদের জন্যও এটি প্রদান করা হতো।
অপ্রত্যাশিত ঈদ উপহার
অতিথিদের সারপ্রাইজের মত একটি ব্যতিক্রমী উপহার দেওয়া হতো, যা হত তাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাশার বাইরে। কেকের ভেতর চিনির পরিবর্তে স্বর্ণমুদ্রা রাখা হতো, অথবা মিষ্টির ওপরে স্বর্ণমুদ্রার পেস্তা বাদাম সাজানো থাকত।
মামলুক সাম্রাজ্যে জামকিয়া
ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে একটি তথ্য দেখা যায় যে, মামলুক যুগে ঈদ-উপহারের নাম ছিল ‘জামকিয়া’। তথ্যটি সঠিক নয়।কারণ ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, মামলুকদের সময় ‘জামকিয়া’ বলতে বোঝানো হতো— বাইতুল মাল থেকে প্রদত্ত সেনাদের মাসিক বেতন। পরিভাষাটি সেনাদের নির্ধারিত ভাতা ও বিশেষ সুবিধা বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হতো। এটি কোনো নির্দিষ্ট উপলক্ষ বা উৎসবের সংশ্লিষ্ট উপহার ছিল না।
ইতিহাস যাইহোক, ঈদ-সালামি ছোট বড় সবার জন্যই আনন্দদায়ক।
কী খবর?
আপনারাও কি সালামি খুঁজে বেড়াচ্ছেন?