মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: রয়টার্স

১৮ মার্চ, ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘সিরিয়া পুনর্গঠন সম্মেলন’-এর এক ফাঁকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মন্ত্রীর সহকারী নাতাশা ফ্রান্সিসকি সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আশ শাইবানির হাতে একটি শর্তসাপেক্ষ তালিকা তুলে দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শর্তাবলি

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া সরকারের কাছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত উপস্থাপন করেছে। এসব শর্ত পূরণ করা হলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে শিথিল করা হবে।

এধরনের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা পূর্বে শোনা যায়নি। গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল দামেস্ক ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সরাসরি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক যোগাযোগ।

রয়টার্স জানায়, এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে ছয়টি আলাদা সূত্র থেকে, যার মধ্যে দুজন মার্কিন কর্মকর্তাও রয়েছেন। তবে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় কেউই প্রকাশ্যে নাম বলতে রাজি হননি।

রসায়নিক অস্ত্র ও বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গ

সূত্রগুলোর বরাতে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. সিরিয়ায় অবশিষ্ট থাকা সব রসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করা,
২. সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করা
৩. সিরিয়ার শাসনব্যবস্থায় কোনো বিদেশি নাগরিককে দায়িত্ব না দেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী, সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে উইগুর, জর্ডান ও তুরস্কের নাগরিকরা দায়িত্বে আছেন, যা অন্যান্য দেশের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া, সিরিয়ায় নিখোঁজ মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসকে খুঁজে বের করতে একটি ‘যোগাযোগ সমন্বয়ক’ নিয়োগের অনুরোধও করেছে ওয়াশিংটন, যাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও কার্যকর হয়।

নিষেধাজ্ঞা শিথিলতা ও প্রতিক্রিয়া

রয়টার্স জানায়, সব শর্ত পূরণ হলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে শিথিল করা হবে। তবে, শিথিলতার ধরন কিংবা সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি বলেও সূত্রগুলো জানায়। এখনো পর্যন্ত সিরিয়া বা যুক্তরাষ্ট্র— কোন পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা অত্যন্ত জরুরি। যদিও মাঝে কিছু নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল খুব সীমিত।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আশ-শারা ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘স্বৈরশাসক আসাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তার পতনের পরও বহাল রাখা এক ধরনের জুলুম ও স্পষ্ট অন্যায়।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা