সুদানের রাজধানী খার্তুমের পশ্চিমে ওমদুরমানের ওয়াদি সিদনা সামরিক বিমানবন্দরে উড্ডয়নের সময় একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৭ জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিমানটি উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি হতাহত হন। তবে সেনাবাহিনী হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
দুর্ঘটনার পর দমকল কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, এবং আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিমানটি ওমদুরমানের আল-ইস্কান এলাকার ৭৫ নম্বর ব্লকে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর একটি সূত্র ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল অ্যান্টোনোভ মডেলের। এতে থাকা পাইলট, কো-পাইলট, প্রকৌশলীসহ বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ‘কারারি প্রতিরোধ কমিটি’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হতাহতদের ওমদুরমানের আল-নো টিচিং হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
বিমান দুর্ঘটনার একদিন আগে সুদানের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস’ (আরএসএফ) দাবি করেছিল, তারা সেনাবাহিনীর একটি সামরিক বিমান ভূপাতিত করেছে। বাহিনীটি জানায়, দক্ষিণ দারফুরের রাজধানী নিয়ালার আকাশে তারা ইলিউশিন মডেলের একটি সামরিক বিমান ভূপাতিত করেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জাতিসংঘ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সংঘাতের গতিপ্রকৃতিতে পরিবর্তন এসেছে। মধ্যাঞ্চল (খার্তুম ও আল-জাজিরা) এবং দক্ষিণাঞ্চল (নাইল আল-আবিয়াদ ও উত্তর কুর্দোফান) অঞ্চলে সেনাবাহিনী পুনরুদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। তবে আরএসএফ এখনো দারফুর অঞ্চলের চারটি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।
খার্তুম রাজ্যের তিনটি প্রধান শহরের মধ্যে সেনাবাহিনী বর্তমানে বাহরি শহরের ৯০ শতাংশ, ওমদুরমানের বেশিরভাগ এলাকা এবং রাজধানী খার্তুমের ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে খার্তুমের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল এখনও র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের দখলে রয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা