মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

আফগানিস্তান-ভারত সম্পর্ক জোরদার, উদ্বিগ্ন পাকিস্তান

আফগানিস্তান-ভারত সম্পর্ক জোরদার, উদ্বিগ্ন পাকিস্তান
আফগানিস্তান-ভারত সম্পর্ক জোরদার, উদ্বিগ্ন পাকিস্তান। ছবি : হুররিয়াত রেডিও

আফগানিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। মার্কিন সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত কাবুলে ইসলামি আমিরাতের প্রতিনিধিদের রাষ্ট্রদূতের মর্যাদায় স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। এটি আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে ভারতের কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কও ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ মাসে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, যেখানে আফগানিস্তানের রপ্তানিই প্রধান অংশ। কাবুলের রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও অর্থনৈতিক এই অগ্রগতি দেশ দুটির পারস্পরিক সহযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত শক্তি হিসেবে ভারতের অবস্থান দৃঢ়। আফগানিস্তানের জন্য দেশটির গুরুত্ব অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। যদিও অতীতে দুই দেশের সম্পর্কে নানা চড়াই-উতরাই ছিল, ইসলামি আমিরাত এখন ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের ওপর জোর দিচ্ছে।

আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলবী আমির খান মুত্তাকি জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ভারত বা পাকিস্তান—কারও পক্ষ নিয়ে অন্য পক্ষের শত্রু হতে চায় না। দেশটি স্বাধীন ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। তিনি বলেন, আফগানিস্তান দীর্ঘ চার দশকের যুদ্ধের শিকার হয়েছে এবং এখন তাদের মূল লক্ষ্য বিশ্ববাসীর সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলা।

তবে ভারত-আফগানিস্তান সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা পাকিস্তানের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় আফগানিস্তানকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখত ইসলামাবাদ। কিন্তু মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর দেশটির ওপর পাকিস্তানের প্রভাব অনেকটাই কমে গেছে।

পাকিস্তান আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে রাখতে চাইছে এবং দেশটির ওপর প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে কাবুলের বর্তমান সরকার বারবার বলছে, তারা কোনো দেশের প্রভাব বা চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। আমির খান মুত্তাকি দোহা চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ফলে দেশটি স্বাধীনভাবে পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে পারবে।

আফগানিস্তান একদিকে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি বজায় রাখার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি না করেই নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণের কৌশল নির্ধারণ করছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় এই ভারসাম্য ধরে রাখা ইসলামি আমিরাতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা