মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের পরোক্ষ সংলাপ

সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের পরোক্ষ সংলাপ
সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের পরোক্ষ সংলাপ। ছবি : আশ-শারকুল আওসাত

সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দেশটির নতুন প্রশাসনের সঙ্গে পরোক্ষ বার্তা বিনিময় করেছে তেহরান। পাশাপাশি দামেস্কের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ রেজা রউফ শায়বানি জানিয়েছেন, ‘আমরা সিরিয়ার বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যোগাযোগ করছি এবং তাদের কাছ থেকে বার্তাও পেয়েছি।’

ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘মেহের’ শায়বানির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সিরিয়ার চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তেহরানের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনেও আগ্রহী তেহরান। শায়বানি বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সময়মতো যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, দামেস্ক পরিস্থিতি নিয়ে ইরানের অবস্থান স্পষ্ট—সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সব রাজনৈতিক পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যে সিরিয়ার কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরে শায়বানি বলেছেন, দেশটির ভবিষ্যৎ কেবল জনগণের হাতেই থাকা উচিত। এজন্য সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপের আমরা বিরোধিতা করি।’

শায়বানি জানান, মস্কো সফরে তিনি রাশিয়ার সিরিয়া বিষয়ক প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত এবং উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় দামেস্কের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

তিনি বলেন, ‘এই সফর ছিল আঞ্চলিক পরামর্শ ও চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ, যার মাধ্যমে সিরিয়া সংকটে প্রভাবশালী দেশগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।’

শায়বানি আরও বলেন, ইরান ও রাশিয়া সিরিয়া ইস্যুতে একাধিক বিষয়ে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। এ সফরে উভয় দেশ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে।

শায়বানি বলেন, সিরিয়ার জনগণ ও স্থানীয় রাজনৈতিক শক্তিগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে দেশটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা উচিত। জাতিসংঘের ২২৫৪ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে রয়েছে তেহরান ও মস্কো।

এর আগে ইরানের সংবাদ সংস্থা ‘তাসনিম’ জানায়, তেহরান ও মস্কো সিরিয়ার অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক ঐক্য রক্ষার বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।

সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ শায়বানি জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইরান থেকে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছে তার দেশ। সম্প্রতি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ইতিবাচক বার্তাগুলোকে এমন নীতিতে পরিণত করা প্রয়োজন, যা সিরিয়ার জনগণ বাস্তবে অনুভব করতে পারে।’

এদিকে, সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ইরান যে পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই, তা প্রকাশ পেয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বক্তব্যে।

গত ডিসেম্বরে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। তিনি আরও বলেন, ‘একদল সম্মানিত ব্যক্তি বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তনে উদ্যোগী হবে এবং বিপ্লবীদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা