মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

যুদ্ধের ক্ষত পেরিয়ে হাসি-আনন্দে শৈশব খুঁজছে গাজার শিশুরা

যুদ্ধের ক্ষত পেরিয়ে হাসি-আনন্দে শৈশব খুঁজছে গাজার শিশুরা
যুদ্ধের ক্ষত পেরিয়ে হাসি-আনন্দে শৈশব খুঁজছে গাজার শিশুরা। ছবি : আনাদোলু

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী হামলা শিশুদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। প্রাণহানির পাশাপাশি তারা হারিয়েছে শিক্ষার অধিকার ও খেলাধুলার আনন্দ। যেখানে আগে পার্কগুলো ছিল শিশুদের হাসি-আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু, আজ সেখানে শুধুই ধ্বংসাবশেষ। তবুও শৈশবের স্বাভাবিক আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়নি তারা। ভাঙাচোরা দোলনা আর ধ্বংসস্তূপের মাঝেই খুঁজে নিচ্ছে শৈশবের ক্ষণিকের সুখ।

গাজার পশ্চিমাঞ্চলের তেল আল-হাওয়া এলাকার ‘বার্সেলোনা পার্ক’ ছিল একসময় শিশুদের প্রাণের কেন্দ্র। কিন্তু টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় সেই পার্ক আজ পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। চারপাশে ধ্বংসের চিহ্ন, ভাঙা খেলনার টুকরো, তবুও সেখানে খেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু শিশু।

পার্কের এক কোণে দোলনায় দুলছিল ছোট্ট মেয়ে সাহার আল-খোর। তার কণ্ঠে বিষাদের সুর, ‘আগে এখানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতাম। এখন কেউ নেই, কেউ শহীদ হয়েছে, কেউ আহত, কেউবা পালিয়ে গেছে।’ তার চোখেমুখে বন্ধুহীনতার বেদনা স্পষ্ট, তবু সে আশা হারায়নি।

অন্যদিকে, লিয়ান আল-আশকার তার ছোট বোনকে ভাঙা দোলনায় দোল দিচ্ছিল। সে বলল, ‘ইসরায়েল সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা খেলবই। আমাদেরও হাসি-আনন্দের অধিকার আছে।’ তার কচি মনেও স্পষ্ট যুদ্ধের ভয়াবহতা, তবু শৈশবের চঞ্চলতা হারায়নি।

একই পার্কে খেলছিল আরেক শিশু, জুরি আল-গাজালি। ভাঙা খেলনায় দোল খেতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকা সত্ত্বেও তার কণ্ঠে ছিল সাহস, ‘আমরা এখানেই খেলব। যুদ্ধ আমাদের শৈশব কেড়ে নিতে পারেনি, পারবেও না।’

ইসরায়েলি হামলায় গাজার বেশিরভাগ বিনোদন কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্যালয়গুলোও রেহাই পায়নি। তবে ধ্বংসস্তূপের মাঝেই খেলার ছলে বেঁচে থাকার শক্তি খুঁজে নিচ্ছে গাজার শিশুরা। তাদের অদম্য মনোবল যেন প্রতিনিয়ত প্রমাণ করছে, যুদ্ধের ভয়াবহতা তাদের শৈশবের আনন্দ কেড়ে নিতে পারেনি।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই তারা খুঁজে নিচ্ছে শৈশবের রঙ। যুদ্ধ ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তাদের অদম্য স্পৃহা শুধু শৈশবের প্রতীক নয়, বরং মানবিকতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা