ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণা চূড়ান্তভাবে শেষ হয়ে গেছে। পাশাপাশি, তিনি মিসরের বিরুদ্ধে গাজার ফিলিস্তিনিদের বের হতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
আজ রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা এমন কোনো সংগঠনকে থাকতে দেব না, যারা আমাদের ধ্বংস করতে চায়। ৭ অক্টোবরের পর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা চিরতরে শেষ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শান্তি আসে শক্তির মাধ্যমে। আমরা যখন অত্যন্ত শক্তিশালী হব এবং একসঙ্গে দাঁড়াব, তখন বিরোধীরা তাদের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হবে।’
নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে (আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে) সফল হয়েছে, কারণ তারা ফিলিস্তিন ইস্যুকে পাশ কাটিয়েছে। তার ভাষায়, ‘আমরা যখন মধ্যপ্রাচ্যে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব এবং কথিত ইরানি জোট নির্মূল করব, তখন সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে নতুন কূটনৈতিক চুক্তির পথ উন্মুক্ত হবে।’
গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘বহু বছরের মধ্যে প্রথম নতুন ধারণা’ হিসেবে প্রশংসা করেন নেতানিয়াহু। তবে তিনি দাবি করেন, এটি কোনো জোরপূর্বক স্থানান্তর বা জাতিগত নির্মূল নয়।
তার ভাষায়, ‘ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমিতে ফিরতে পারবে, তবে এটি হবে সাময়িক স্থানান্তর। তারা তখনই ফিরে আসতে পারবে, যদি সন্ত্রাসবাদ পরিত্যাগ করে।’
মিসর প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যেসব দেশ গাজাকে উন্মুক্ত কারাগার বলে অভিহিত করে, তারা কেন ফিলিস্তিনিদের এই কারাগারে আটকে রাখতে চায়? মিসর গাজাকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে। এখন সময় এসেছে তাদের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার।’
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু জানান, ‘আগামী সপ্তাহের মধ্যে জীবিত বন্দিদের ৭৫ শতাংশ মুক্ত করা হবে। হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’
ইসরায়েলের ডানপন্থী সরকার এর আগেও গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৪-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু সৌদি আরবে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের পর্যাপ্ত ভূমি রয়েছে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি দেশ গড়ে তোলা সম্ভব।’
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের মিসর, জর্ডানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। তবে মিসর ও জর্ডানসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ, আঞ্চলিক সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
