মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ১১০ প্রাণহানি, মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক

যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ১১০ প্রাণহানি, মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ
যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ১১০ প্রাণহানি, মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ। ছবি : আনাদোলু এজেন্সি

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ১১০ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইউরোমেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর। সংস্থাটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ এনেছে।

শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে গড়ে প্রতিদিন ছয়জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে নতুন হামলার শিকার ব্যক্তিরা যেমন রয়েছেন, তেমনি আহত হয়েও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করা মানুষও রয়েছেন।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর থেকে গড়ে প্রতিদিন ৪৭ জন মানুষ আহত হচ্ছেন এবং এই সময়ে মোট ৯০১ জন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি, ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ৫৭১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা গড়ে প্রতিদিন ৩০ জনের সমান। তবে এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। সংস্থাটির দাবি, ইসরায়েল প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জাম প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। কেবল হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞই নয়, বরং মানবিক সহায়তা প্রবাহেও বাধা সৃষ্টি করছে তারা। ফলে আহত ও অসুস্থ হাজারো মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না এবং গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

• গাজার বাইরে চিকিৎসার সুযোগ: যুদ্ধবিরতির পর থেকে অল্পসংখ্যক রোগীকে গাজা ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, ফলে বহু মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন।

• চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকট: ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী, অক্সিজেন প্লান্ট, জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

ইসরায়েল গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবু প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে, ফলে হাজারো গৃহহীন মানুষ ভয়াবহ ঠান্ডা ও প্রতিকূল পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এছাড়া, বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার পুনর্গঠনে বাধা সৃষ্টি করায় বাসিন্দারা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। পাশাপাশি, খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রবেশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা থাকায় গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইউরোমেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, এই ‘গণহত্যা’ বন্ধ করতে এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলের নীতি ও কার্যক্রমের কারণে গাজার জনগণ ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।