ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নতুন মধ্যপ্রাচ্য গঠনের প্রক্রিয়ায় কাতারকে অবশ্যই একটি পক্ষ বেছে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা কাতার থেকে আমাদের বন্দিদের মুক্ত করার জন্য সবকিছু করছি। তবে এটাও অস্বীকার করা যাবে না যে কাতার আল জাজিরা পরিচালনা করে, যা আরব ও মুসলিম বিশ্বকে উসকে দেয়।’
ইসরায়েলের চ্যানেল ১৪-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু এই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, কারণ তারা বন্দিমুক্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে কাতারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা কি উত্তেজনা সৃষ্টি করবে, নাকি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে?’
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে উপস্থাপক নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কাতারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন, অথচ আপনি বলছেন কাতারকে পক্ষ নিতে হবে। তাহলে, যদি কাতার ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়, তবে কেন ইসরায়েল তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে?’
জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য বন্দিমুক্তি। ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ৭৫% জীবিত বন্দিকে মুক্ত করতে পেরেছি, তবে এখনও বাকিদের ফিরিয়ে আনতে চাই। কাতারের সহায়তা কাজে লাগানো হলেও বাস্তবতা হলো, তারা এমন গণমাধ্যম তথা আল জাজিরা পরিচালনা করে যা পুরো আরব ও মুসলিম বিশ্বকে উত্তেজিত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াশিংটনে আমাদের রাষ্ট্রদূত ইয়াহিয়েল লাইটার ঠিকই বলেছেন—কাতার একইসঙ্গে উত্তেজনা ছড়ানো ও শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে না। তাদের অবশ্যই একটি পক্ষ বেছে নিতে হবে, এবং আমি আশা করি তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’
এদিকে, ইসরায়েলি পত্রিকা মারিভ জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক মন্ত্রিসভা (ক্যাবিনেট) আগামী মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা করবে।
ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত-এর প্রধান একটি প্রতিনিধিদলকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ সম্পন্ন করতে এবং দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধিদল দোহায় যাচ্ছে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য। ইসরায়েল আশা করছে, শুক্রবারের মধ্যেই বন্দিমুক্তির তালিকা হাতে পাবে।
এছাড়া, ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ জানিয়েছে, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা মুক্তি দেওয়ার জন্য নির্ধারিত বন্দিদের তালিকা পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে, যা আগামী সপ্তাহান্তে কার্যকর হবে।
সূত্র: আল জাজিরা