গাজায় টানা ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়েছে। কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত এই চুক্তি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
হামাস এই চুক্তিকে ফিলিস্তিনি জনগণের সাহসিকতা এবং গাজার প্রতিরোধ আন্দোলনের সফলতার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ‘এই যুদ্ধবিরতি আমাদের জনগণের দৃঢ়তা এবং প্রতিরোধের ফসল। শত্রুরা গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।’
খলিল আল-হাইয়ার বক্তব্য
হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, ‘শত্রুরা ধ্বংস এবং হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, কিন্তু তারা আমাদের বন্দীদের মুক্ত করতে বাধ্য হচ্ছে। এটি প্রতিরোধের মাধ্যমে অর্জিত একটি বড় বিজয় এবং মর্যাদাপূর্ণ বন্দী বিনিময়ের সূচনা।’
কাতারের প্রতিক্রিয়া
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তিকে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘এই চুক্তি অর্জনে অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং সফল সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা আশা করি, দ্রুত এর বাস্তবায়ন শুরু হবে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তির পথ উন্মোচিত হবে।’
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদিল ফাত্তাহ আস সিসি
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আস সিসি এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ এক বছরের প্রচেষ্টার ফল এটি। মিশর সর্বদা ন্যায়সঙ্গত শান্তি এবং ফিলিস্তিনের বৈধ অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এই যুদ্ধবিরতি শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এটি একটি বড় অগ্রগতি। গাজায় আটক ব্যক্তিদের মুক্তি এবং মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই চুক্তি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়ক হবে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তিকে তার প্রশাসনের সফলতার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি প্রমাণ করে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি ভবিষ্যতের আরও শান্তি চুক্তির জন্য নতুন পথ খুলে দেবে।’
যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে সংঘাতের অবসান ঘটলেও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন দীর্ঘস্থায়ী শান্তির ভিত্তি স্থাপন করতে পারে। তবে বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে সতর্কতা এবং আন্তরিক প্রচেষ্টা অপরিহার্য।
সূত্র : রসদ