২০১১ সালে সিরিয়ার বিপ্লব শুরুর পর এই প্রথমবার কোনো লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সিরিয়া সফর করলেন। শনিবার (১১ জানুয়ারি) লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে গিয়ে দেশটির নতুন প্রশাসনের নেতা আহমাদ আশ শারার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
দামেস্কের ‘আল-শাব’ প্রাসাদে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা ও শরণার্থী সংকটসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আহমদ আল-শারা বলেন, ‘সিরিয়া লেবাননের সব পক্ষের সঙ্গে সমান দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছে।’ তিনি আরও জানান, সিরিয়া-লেবানন সম্পর্ককে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে নতুনভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
আলোচনার অংশ হিসেবে সীমান্ত সমস্যা, চোরাচালান রোধ এবং অর্থনৈতিক ইস্যু নিয়ে কাজ করার জন্য বিশেষায়িত কমিটি গঠনের বিষয়ে দু’পক্ষ একমত হয়েছে। আহমদ আল-শারা বলেন, ‘আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হলো সিরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে রাখা।’
সংবাদ সম্মেলনে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, ‘সিরিয়া ও লেবাননের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতেই ভবিষ্যৎ সহযোগিতা পরিচালিত হবে।’ তিনি আরও জানান, লেবাননে অবস্থানরত সিরীয় শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে আহমদ আল-শারার বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করেছেন।
লেবাননের বর্তমান সরকারের প্রধান নাজিব মিকাতির এই সফর এমন একটি সময়ে, যখন দেশটির সেনাপ্রধান জোসেফ আউন সদ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। গত ৯ জানুয়ারি লেবাননের সংসদ দুই দফা ভোটাভুটির মাধ্যমে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করে। দায়িত্ব গ্রহণের পর জোসেফ আউন দুই দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতার প্রতি সম্মান জানিয়ে সিরিয়ার সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে লেবাননের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়া সফর করেছিলেন। ওই সফরে তিনি সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে বৈঠক করে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়ার মানবিক সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।
২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর লেবাননের প্রগ্রেসিভ সোশালিস্ট পার্টির সাবেক নেতা ওয়ালিদ জুমব্লাট সিরিয়া সফর করেন এবং আহমদ আশ শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই বৈঠকে আহমদ আশ শারা লেবাননের সার্বভৌমত্ব এবং স্থিতিশীলতার প্রতি সিরিয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই লেবানন সাম্প্রদায়িক বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে দক্ষতা অনুযায়ী ক্ষমতার বণ্টন করুক। কারণ সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ক্ষমতা ভাগাভাগি লেবাননের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে।’
সূত্র : ইনাব বালাদি