২০২৪ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে মাহমুদ আব্বাস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর পশ্চিম তীরের এ এবং বি এলাকায় ইসরায়েল মোট ৪৯৩টি স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে ৪৫০টি ছিল বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর।
অসলো চুক্তি-২ অনুযায়ী, পশ্চিম তীরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এ এলাকাগুলো পুরোপুরি ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণে, বি এলাকাগুলোতে প্রশাসনিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনিদের হাতে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ইসরায়েলের হাতে, আর সি এলাকাগুলো পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন।
২০১০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, এসব হামলায় ২ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত এবং ৯০ হাজার ১৬৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
২০২৪ সালে ধ্বংসযজ্ঞের মূল কেন্দ্র ছিল পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চল। তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে ১৮২টি, নুরশামস শরণার্থী শিবিরে ১২৫টি, এবং জেনিন শরণার্থী শিবিরে ৮৭টি স্থাপনা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া জেনিন শহরে ৩১টি স্থাপনা এবং অন্যান্য এলাকায় অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর পশ্চিম তীরের এ, বি, সি এলাকা ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েল মোট ১ হাজার ৭৬৭টি স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এর ফলে ৪ হাজার ২৫৮ জন ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৫ জন।
গত ১৫ বছরে পশ্চিম তীরে ইসরায়েল মোট ১২ হাজার ফিলিস্তিনি স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এসব ঘটনায় ১৯ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত এবং ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪১৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বরতার পাশাপাশি পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমেও হামলার মাত্রা বেড়ে গেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমে ইসরায়েলি হামলায় ৮৩৮ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার ৭০০ জন।
গাজায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সেখানে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী। এছাড়া ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংসযজ্ঞ ও দুর্ভিক্ষে বহু শিশু ও বৃদ্ধ প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘ গাজার পরিস্থিতিকে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সূত্র: আনাদোলু