মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনার বিষয়ে কংগ্রেসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছে। গাজায় ইসরায়েলের চলমান বিধ্বংসী যুদ্ধের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই অস্ত্র প্যাকেজে ৫০০ পাউন্ড ওজনের যুদ্ধবোমা, নির্ভুলভাবে লক্ষ্যভেদী মিউনিশন, আর্টিলারি শেল, যুদ্ধবিমান, অ্যাটাক হেলিকপ্টারের ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এর আগে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি বিশাল অস্ত্র প্যাকেজ অনুমোদন দেয়, যাতে যুদ্ধবিমান, সামরিক যান, বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া নভেম্বরে আরও একটি প্যাকেজ অনুমোদন করা হয়, যার মূল্য ছিল ৬৮০ মিলিয়ন ডলার। এতে ছোট ডায়ামিটারের বোমা এবং নির্ভুল লক্ষ্যভেদী গাইডেন্স কিট ছিল।
তবে গাজায় ভারী বোমার একটি চালানের সরবরাহ সাময়িকভাবে স্থগিত করায় গত বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বাইডেনের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তবু বাইডেন বরাবরই ইসরায়েলের প্রতি নিজের অঙ্গীকার এবং দেশটির ‘স্ব-রক্ষার’ অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছেন।
ওয়াশিংটন থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক অ্যালান ফিশার জানিয়েছেন, কংগ্রেসে এই অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিশ্চিত করাই তার অন্যতম অগ্রাধিকার। এই পরিকল্পনা আটকে দিতে কংগ্রেসে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন, যা কার্যত অসম্ভব।
তবে গাজার চলমান মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কিছু আইনপ্রণেতা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৭১৭ জন শহিদ এবং ১ লাখ ৮ হাজার ৮৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন বলেছে, ইসরায়েল গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করার পরিকল্পিত নীতি অনুসরণ করছে। বর্তমানে গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত।
শুক্রবার ইসরায়েলি সেনারা উত্তর গাজার দুটি হাসপাতাল থেকে রোগী ও কর্মীদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর আগে কামাল আদওয়ান হাসপাতালে হামলা চালিয়ে এর পরিচালককে আটক করা হয়।
শনিবার শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় আল-ঘোলা পরিবারের ১১ জন শহিদ হন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে প্রতিবেশী আহমেদ আয়ান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাড়িটিতে কোনো প্রতিরোধযোদ্ধা ছিলেন না। এটি ছিল সম্পূর্ণ বেসামরিক মানুষের বসতবাড়ি।’
সূত্র: আল জাজিরা
