মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

গাজার ত্রাণ সহায়তা কমানোর পরিকল্পনায় ইসরায়েল

গাজার ত্রাণ সহায়তা কমানোর পরিকল্পনায় ইসরায়েল
গাজার ত্রাণ সহায়তা কমানোর পরিকল্পনায় ইসরায়েল। ছবি : আনাদোলু

ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানোর পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদন অনুসারে, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে।

দীর্ঘ ১৮ বছরের অবরোধে গাজার মানুষের জীবন চরম সংকটে। বিশেষ করে উত্তর গাজায় খাদ্য, পানি এবং ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আক্রমণে হাজারো মানুষ দক্ষিণে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের চাপে গাজায় সহায়তা ঢোকার অনুমতি দিয়ে এসেছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে গাজায় প্রবেশ করা সহায়তার পরিমাণ আগের মতো থাকবে না। এ বিষয়ে নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় চলছে।

ইসরায়েলের দাবি, গাজায় প্রবেশ করা সহায়তার বেশিরভাগই হামাস ব্যবহার করছে নিজেদের ক্ষমতা পুনর্গঠনের জন্য। এ নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়িসরায়েল কাটজ সম্প্রতি একটি বৈঠকে গাজায় হামাসের ক্ষমতা ধ্বংসের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেছেন।

ইসরায়েলের টানা অবরোধে গাজাকে কার্যত বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার বানানো হয়েছে। প্রায় ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই শরণার্থী। দীর্ঘদিনের এই অবরোধে খাদ্য, পানি এবং ওষুধের অভাবে পুরো অঞ্চলটি মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ এবং ‘অনারা’ সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। তবে ইসরায়েলের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে জরুরি সহায়তা গাজায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি নেতারা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার জনগণকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়ে তাদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের টানা হামলা এবং অবরোধে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।

এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও ইসরায়েলের কড়াকড়ির কারণে তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ এখন অত্যন্ত জরুরি।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা