মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সিরিয়া বিপ্লবের টাইমলাইন : যেভাবে হলো আসাদের পতন

সিরিয়া বিপ্লবের টাইমলাইন : যেভাবে হলো আসাদের পতন
সিরিয়া বিপ্লবের টাইমলাইন : যেভাবে হলো আসাদের পতন। ছবি : আরটি অ্যারাবিক

সিরিয়ায় ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ এর সকালে ৬১ বছর ধরে চলা বাথ পার্টির রক্তাক্ত শাসনের অবসান ঘটে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো রাজধানী দামেশকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বিপুল জনস্রোতের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় ঐতিহাসিক এই ঘটনা।

১৫ মার্চ ২০১১। দারা শহরের একটি স্কুলের দেয়ালে কিছু ছাত্র লিখেছিল— ‘ডাক্তার (বাশার আল-আসাদ), এবার তোমার পালা।’ সেই ক্ষুদ্র বিদ্রোহ থেকেই জন্ম নেয় সিরিয়ার দীর্ঘতম গণবিপ্লব। সম্ভবত দীর্ঘতম গৃহযুদ্ধও।

এরপর ২৭ নভেম্বর ২০২৪ থেকে শুরু হওয়া সশস্ত্র বিপ্লবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বে ছিল ‘হাইয়াত তাহরির আল-শাম’। এই বিদ্রোহের সূত্রপাত হয় পশ্চিম আলেপ্পোর গ্রামীণ অঞ্চলে। এরপর ঝড়ো গতিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো আলেপ্পো, ইদলিব, হিমস, হামা হয়ে দামেশকের রাজসড়কে পৌঁছে যায়।

১২ দিনের টাইমলাইন

২৭ নভেম্বর
হাইয়াত তাহরির আল-শাম পশ্চিম আলেপ্পোর ‘ক্বাবতান আল-জাবাল’ থেকে ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে। এই আক্রমণে অন্যান্য বিরোধী গোষ্ঠীও যোগ দেয়।

২৮ নভেম্বর
বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর উপকণ্ঠে পৌঁছে যায় এবং ইদলিবের বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করে নেয়। এ সময় সরকারি বাহিনীর ভারী অস্ত্র ও যানবাহন তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

২৯ নভেম্বর
ইদলিবের গুরুত্বপূর্ণ সারাকিব শহর দখল করে বিদ্রোহীরা এবং আলেপ্পোর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ শুরু করে।

৩০ নভেম্বর
বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর অধিকাংশ এলাকা দখল করে নেয়। একই দিন আসাদ সরকার আলেপ্পো বিমানবন্দর ‘পিকেকে/ ওয়াইপিজি’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেয়। তবে দ্রুতই বিদ্রোহীরা এই বিমানবন্দর পুনর্দখল করে নেয়।

এছাড়া ইদলিবের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো— মাআররাত আল-নুমান, খান শেইখুন, এবং জর্জানাজ দখলে আসে। একই সঙ্গে ম্যানবিজ-আলেপ্পো রোড এবং এম-৪ মহাসড়কও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে আসে।

১ ডিসেম্ব
‘ফজর আল-হুররিয়া’ নামে নতুন অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তেল রিফাত পুরোপুরি দখল করে তারা। এই দিন সুইদা প্রদেশে ড্রুজ সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাশার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়।

২ ডিসেম্বর
হামা প্রদেশের ১৬টি শহর দখল করে বিদ্রোহীরা।

৩ ডিসেম্বর
‘পিকেকে/ ওয়াইপিজি’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পূর্ব দেইর আল-জোর অঞ্চলে সরকারী বাহিনীর উপর হামলা চালায়। এদিকে সরকারি হামলায় আলেপ্পো ও ইদলিবে ৮১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩০৪ জন আহত হয়।

৪ ও ৫ ডিসেম্বর
হামা ও দামেশকের আশপাশে বিদ্রোহীরা ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করে।

৬ ও ৭ ডিসেম্বর
বিদ্রোহীরা হিমস শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে যায় এবং দামেশকের দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ শুরু করে।

৮ ডিসেম্বর
দামেশকের নিয়ন্ত্রণ হারায় বাশার সরকার। বিক্ষোভকারীরা সাঈদনায়া কারাগার ভেঙে বন্দিদের মুক্ত করে।

বাথ পার্টির দীর্ঘ ৬১ বছরের শাসনের অবসানের মাধ্যমে আল-আসাদ পরিবারের রক্তাক্ত শাসনের সমাপ্তি ঘটে। দামেশক ও অন্যান্য শহরে হাফিজ আল-আসাদের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে বিজয়ী জনতা।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা