মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

যে কারণে দিন দিন মিশরে ডলারের দাম বাড়ছে

মিশরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে ডলারের গড় মূল্য ৫০ মিশরীয় পাউন্ড অতিক্রম করেছে, দেশটির ইতিহাসে য সর্বোচ্চ। ডলারের এই ঊর্ধ্বগতি শুরু হয় যখন প্রধানমন্ত্রী ড. মুস্তাফা মাদবুলি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন ‘পাউন্ডের বিনিময় হার আগামীতে ৫ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।’

তিনি বলেন ‘অতীতে বিনিময় হার স্থির রাখার কারণে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল। এই পরিস্থিতি এড়াতে সরকার এখন নমনীয় বিনিময় হার বজায় রাখার নীতিতে কাজ করছে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডলারের ঊর্ধ্বগতির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে—

  • রমজানের আগে আমদানি বাড়াতে ব্যাংকগুলোতে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) চালু করা হয়েছে, যা ডলারের চাহিদা বাড়িয়েছে।
  • বছরের শেষ দিকে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক হিসাব মেলাতে ডলারে লেনদেন সমাপ্ত করার চেষ্টা করছে।
  • সম্প্রতি মিশরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৩টি অপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য ডলার সরবরাহ সহজ করেছে। এটি ডলারের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।

মিশরের ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আবদুল আ’ল মনে করেন, বছরের শেষ দিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ এবং ঋণসেবা ব্যয়ের (Debt Servicing Cost) চাপও ডলারের দাম বাড়িয়েছে।

চলতি অর্থবছরে মিশরকে প্রায় ৩৩.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। এ চাপ মিশরের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে আরও সংকট তৈরি করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলারের বিনিময় হার আপাতত ৪৯.৫ থেকে ৫০.৫ মিশরীয় পাউন্ডের মধ্যে ওঠানামা করবে। তবে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত নেই।

চলতি বছরের মার্চে মিশরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কালো বাজারের দৌরাত্ম্য রোধে বিনিময় হার মুক্ত করে। এর ফলে ডলারের মূল্য প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০.৯৪ মিশরীয় পাউন্ড থেকে প্রায় ৫০ পাউন্ডে পৌঁছে যায়।

সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সোহর দোমাতি বলেন, ডলারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ভর করবে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ এবং আসন্ন ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পূরণের উপর। তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।

সূত্র: আরটি অ্যারাবিক

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা