বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমাগত অগ্রগতির মুখে ইরান তাদের সামরিক ও কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সিরিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শনিবার নিউইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
পত্রিকাটি অঞ্চলিক ২ জন এবং ইরানের তিনজন কর্মকর্তার বরাতে জানায়, শুক্রবার থেকেই ইরান তাদের কুদস ফোর্সের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাসহ বেশ কিছু কর্মী ও উপদেষ্টা সরিয়ে নিচ্ছে। এতে বুঝা যাচ্ছে, আসাদ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয় রাখতে ইরান ব্যর্থ হয়েছে।
২৭ নভেম্বর সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ‘রাদউল উদওয়ান’ নামে একটি আকস্মিক অভিযান শুরু করে। ইতোমধ্যেই আলেপ্পো এবং হামার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এইচটিএসের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র জোটটি । শুক্রবার বিদ্রোহীদের চাপের মুখে সরকারি বাহিনী এবং ইরানের মিত্র সামরিক গোষ্ঠীগুলো আকস্মিকভাবে দেইর আল-জোর শহর থেকেও পিছু হটে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ইরান ইতিমধ্যেই কুদস ফোর্সের শীর্ষ দুই কর্মকর্তা, বিপ্লবী গার্ডের সদস্য, কূটনৈতিক কর্মী ও তাদের পরিবারকে সিরিয়া থেকে সরিয়ে ইরাক ও লেবাননে পাঠিয়েছে। কিছু অংশ বিমানে তেহরানে চলে গেছে, আর কিছু অংশ সড়কপথে লেবানন, ইরাক এবং সিরিয়ার লাতাকিয়া বন্দরে চলে গেছে।
ইরানের বিশ্লেষক মাহদি রহমতি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘সিরিয়ার সেনাবাহিনী যদি লড়াই করতে আগ্রহী না হয়, তাহলে ইরানের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা পালন করা সম্ভব নয়। সামরিকভাবে এই পরিস্থিতি ইরানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
এছাড়া ইরানের দুই কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে জানান, বিদ্রোহীদের হাত থেকে সিরিয়ার হামা ও দেইর আল-জোরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর কুদস ফোর্সের দুই জেনারেল ইরাকে পালিয়ে গেছেন।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ায় ইরানের এই পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট আসাদকে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে সমর্থন দিয়ে আসছে তেহরান। একইসঙ্গে সিরিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার করে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র পাঠানোর গুরুত্বপূর্ণ রুটও এখন ইরানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সূত্র : আল আরাবি আল জাদিদ