মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

তুর্কি সার্জনের চোখে গাজা গণহত্যার নৃশংস চিত্র

তুর্কি সার্জনের চোখে গাজা গণহত্যার নৃশংস চিত্র
তুর্কি সার্জনের চোখে গাজা গণহত্যার নৃশংস চিত্র। ছবি : আনাদোলু

গাজার ধ্বংসস্তূপে কাজ করতে গিয়ে তুরস্কের শিশু সার্জন তানার কামাজি দেখেছেন এক ভয়াবহ বাস্তবতা—একটি জাতির ওপর অব্যাহত গণহত্যা। তিনি বলেন, ‘আমি প্রকৃত অর্থেই গণহত্যা দেখেছি।’

তানার কামাজি আন্তর্জাতিক এক সংস্থার অধীনে গাজার খান ইউনুসে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। সেখানে প্রতিনিয়ত তিনি দেখেছেন হাসপাতালের ওপর বোমা বর্ষণ, চিকিৎসকদের হত্যা করা এবং আহতদের চিকিৎসার পথ বন্ধ করার মতো নিষ্ঠুরতা।

গাজায় পৌঁছে প্রথম দিনই তানার কামাজি যে শিশুটির অস্ত্রোপচার করেন, সেই শিশুটি রাস্তার পাশে খেলছিল। তার শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছিল ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলি। শিশুটির করুণ চাহনিতে ফুটে ওঠা অব্যক্ত যন্ত্রণা তানারের হৃদয় ভারি করে তুলেছিলো।

‘যখন আমরা গাজায় পৌঁছাই, তখন চারপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ। ইসরায়েল বোমা বর্ষণ করে একের পর এক হাসপাতাল ধ্বংস করেছে। চিকিৎসকদের হত্যা করেছে, অনেককে আটক করেছে, নির্যাতন করেছে। এই নৃশংসতা আমরা নিজের চোখে দেখেছি’ বলছিলেন তানার কামাজি।

তানার কামাজি বলেন, গাজার মানুষ বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে ধ্বংসপ্রায় ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। একটি জাতি ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে। ‘বিশ্বের আর কোথাও আমি এমন অমানবিকতা দেখিনি,’

ইসরায়েলের অবরোধে বিধ্বস্ত গাজায় আহতদের চিকিৎসা করতে দেওয়া হচ্ছে না। খাদ্য ও বাইরের সাহায্য পৌঁছানোর পথও বন্ধ। এসবের মধ্যেই চলছে এক নির্মম নৃশংস গণহত্যা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের মার্কিন-সমর্থিত হামলায় ১ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও নারী। ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ। খাদ্য ও পানির অভাবে মারা গেছে শত শত শিশু ও বৃদ্ধ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজা হয়ে উঠেছে এক মানবিক বিপর্যয়ের প্রতীক।

তানার কামাজি বলেন, ‘এই নৃশংসতার মধ্যেও গাজার মানুষ লড়াই করছে। প্রতিটি আহত শিশুর চোখে আমি এক অব্যক্ত যন্ত্রণা দেখেছি।

গাজার এই নিঃশব্দ কান্না হয়তো বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছায় না। কিন্তু তানার কামাজির মতো মানুষেরা সাক্ষ্য দিয়ে যান, কিভাবে একটি জাতি টিকে থাকার জন্য প্রতিদিন জীবন বাজি রেখে লড়ছে।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা