লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ দুই দ্বীপ, তিরান ও সানাফিরে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয়ের অংশ হিসেবে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সৌদি চায়, এই ঘাঁটির মাধ্যমে লোহিত সাগরে নৌ চলাচল পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। বিশেষ করে ইরান থেকে গাজা ও লেবাননে অস্ত্র চোরাচালান রোধ করাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
তবে সৌদি প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে মিসর। কায়রোর আপত্তির পেছনে রয়েছে তিনটি মূল কারণ। প্রথমত, সুয়েজ উপসাগর অঞ্চল থেকে চীন ও রাশিয়ার বিনিয়োগ সরে যাওয়ার শঙ্কা। দ্বিতীয়ত, সিনাই অঞ্চলে বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব। তৃতীয়ত, রিয়াদ ও তেলআবিবের ঘনিষ্ঠতা বাড়লে আঞ্চলিক রাজনীতিতে মিসরের ভূমিকা ক্ষুণ্ন হতে পারে—এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
২০১৬ সালে তিরান ও সানাফির দ্বীপ দুটির নিয়ন্ত্রণ সৌদি আরবের কাছে হস্তান্তরের চুক্তি অনুমোদন করে মিসরের পার্লামেন্ট। তবে চুক্তির বাস্তবায়ন এখনো ঝুলে আছে। এর পেছনে রয়েছে দ্বীপ দুটিতে নজরদারি ক্যামেরা বসানো নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে মতবিরোধ। কায়রো বলছে, প্রস্তাবিত ক্যামেরার কভারেজ সীমা ছাড়িয়ে সিনাই উপদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণের সুযোগ তৈরি করছে।
এদিকে, ইয়েমেন ইস্যুতে আগের অবস্থানেই অনড় মিসর। দেশটি বলেছে, তারা ইয়েমেনে নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না। ১৯৬০-এর দশকে ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই কায়রো এখন শুধু নিরাপত্তা পরামর্শ দিতে চায়, সরাসরি সংঘাতে নয়।
মিসরের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘মাদা মিসর’ জানিয়েছে, কায়রো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সহায়তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, এই ধরনের অভিযানে সম্পৃক্ত হওয়ার মতো সম্পদ মিসরের নেই। পাশাপাশি কায়রো মনে করে, এ ধরনের অনুরোধ মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের স্বার্থরক্ষা কেন্দ্রীক, লোহিত সাগরের নিরাপত্তা নয়।
সর্বশেষ, সুয়েজ খালে মার্কিন জাহাজকে বিনামূল্যে পারাপারের দাবিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যেও ক্ষুব্ধ কায়রো। মিসরের ধারণা, ইয়েমেন ইস্যুতে মার্কিন সহায়তা প্রত্যাখ্যানের কারণেই ট্রাম্প এই বক্তব্য দেন।
সূত্র: রসদ নিউজ