মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সুদান গৃহযুদ্ধের তৃতীয় বছর : পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ

সুদান গৃহযুদ্ধের তৃতীয় বছর : পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ। ছবি : ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস

সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধ তৃতীয় বছরে প্রবেশের সাথে সাথে পরিস্থিতি আরও জটিল ও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধ কেবল একটি অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ নয়, বরং এর প্রভাব আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিস্তৃত হচ্ছে। বর্তমানে সুদানের সেনাবাহিনী কিছু অগ্রগতি অর্জন করলেও, এর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

সেনাবাহিনীর চ্যালেঞ্জ : দারফুরের নিয়ন্ত্রণ

সুদানে চলমান যুদ্ধের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। সুদানি সশস্ত্র বাহিনীর গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল ওসামা আবদুস সালাম জানান, সেনাবাহিনী এখনো পুরো দারফুর অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এদিকে, (RSF)-কে এমন কোনো অবস্থানে পৌঁছাতে দেওয়া যাবে না, যেখানে তারা শান্তি আলোচনা বা সুদানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের শর্ত চাপিয়ে দিতে পারে। এই বাস্তবতা যুদ্ধের পরবর্তী দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আঞ্চলিক প্রভাব ও ভাড়াটে যোদ্ধাদের অংশগ্রহণ

সুদানের যুদ্ধের জটিলতা আরও তীব্র হয়েছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তির সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। বিশ্লেষক জিয়াউদ্দিন বিলাল মন্তব্য করেন, এই যুদ্ধের পেছনে একটি প্রভাবশালী আঞ্চলিক শক্তি সমর্থন দিচ্ছে। যার অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিস্তৃত। একই সঙ্গে, বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক ভাড়াটে যোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যুদ্ধের উদ্দেশ্য এবং এজেন্ডা এখন আর কেবল সুদানের ভেতর সীমাবদ্ধ নেই, বরং তা ছড়িয়ে পড়েছে আঞ্চলিক সীমান্ত পেরিয়ে।

আরএসএফের-এর ভবিষ্যত

সুদানে (RSF)-এর সামনে কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক ভবিষ্যত নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুজাম্মিল আবুল কাসিম মনে করেন, সুদানি জনগণের মূল লক্ষ্য হলো এই বাহিনীকে উৎখাত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জীবনযাত্রার ন্যূনতম শর্ত পূরণ করা। এর ফলে সেনাবাহিনীর প্রতি জনসমর্থন এবং ঐক্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি বিজয়ে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন সুদানের সাধারণ মানুষ।

মানবিক পরিস্থিতি

মানবিক দিক থেকে সুদান এখন এক কঠিন সময় পার করছে।বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুদ্ধ চলতে থাকলে এই সংকট আরও তীব্র হতে পারে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবুও স্থায়ী সমাধান না এলে, মানবিক দুর্দশা আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

সুদানে চলমান যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা রেখেছে। পরিস্থিতি এখনো অস্থির, সংকটপূর্ণ। সেনাবাহিনীর সামনে রয়েছে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে সুদানের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে রাজনৈতিক সমাধান, সামরিক ভারসাম্য এবং মানবিক পরিস্থিতির উন্নতির ওপর। যুদ্ধের পরিণতি এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

সূত্র : আল জাজিরা

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা