বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সঙ্গে গভীর যোগাযোগের তথ্য সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ক্লাউড স্টোরেজ সেবা দিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমে সহায়তা করছে মাইক্রোসফট। এই সহযোগিতা ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে আরও কার্যকর করতে ভূমিকা রাখছে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মাইক্রোসফট কর্মীদের সম্পৃক্ততা
ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, মাইক্রোসফটের কর্মীরা ইসরায়েলি গোয়েন্দা ইউনিটে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এমনকি এক সেনা কমান্ডারের ভাষায়, “তারা যেন আসল সৈনিক।” মাইক্রোসফটের কর্মীদের এই সম্পৃক্ততা ইসরায়েলি গোয়েন্দা ইউনিট থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অতি গোপন ইউনিট পর্যন্ত বিস্তৃত।
‘রোলিং স্টোন’ সিস্টেমে মাইক্রোসফট অ্যাজুরের ব্যবহার
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পশ্চিম তীর এবং গাজায় ফিলিস্তিনিদের জনসংখ্যা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘রোলিং স্টোন’ নামে পরিচিত একটি সিস্টেম ব্যবহার করে। এই সিস্টেম পরিচালিত হচ্ছে মাইক্রোসফটের ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম অ্যাজুরের মাধ্যমে। ফাঁস হওয়া নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি গোপন ইউনিটও এই সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বিক্রিতে উল্লম্ফন
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মাইক্রোসফট থেকে ভাষা অনুবাদ, ওপেনএআই জিপিটি-৪ মডেল, বক্তৃতা থেকে পাঠ্যে রূপান্তর এবং স্বয়ংক্রিয় ডকুমেন্ট বিশ্লেষণের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেবা কিনছে। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর আগের মাসের তুলনায় এসব সেবার ক্রয় ৭ গুণ বৃদ্ধি পায় এবং ২০২৪ সালের মার্চ নাগাদ তা ৬৪ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপে বিপুল ব্যয়
ফাঁস হওয়া নথিতে আরও উঠে এসেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগ মাইক্রোসফট থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ গ্রহণ করেছে। এই প্রশিক্ষণ পরিচালনায় মাইক্রোসফটের বিশেষজ্ঞরা যুক্ত ছিলেন, যা আয়োজন করতে কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যের প্রতিক্রিয়া
এই তথ্যগুলো প্রথম প্রকাশ করেছে ম্যাগাজিন +972 এবং দ্য গার্ডিয়ান। নথিতে উঠে আসা এসব তথ্য ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমে মাইক্রোসফটের ভূমিকা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সূত্র: আনাল আরাবি